দীপঙ্কর মণ্ডল: আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (Aliah University) উপাচার্যকে হেনস্তার ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ করার কথা মনে করিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্ন থেকে তিনি বলেন, “পুলিশ যা ব্যবস্থা নেওয়ার নিয়ে নিয়েছে। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়াশোনা করে তারা সকলে ভাল। সেখানে ছাত্রছাত্রীদের ক্ষোভ থাকতেই পারে। কিন্তু তবুও যে একটু কটু কথা বলেছে তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আমাদের এখানে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়।”
উপাচার্যকে (VC) নিগ্রহের ঘটনায় অভিযুক্ত গিয়াসুদ্দিন মণ্ডলকে এদিন বারাসত আদালতে তোলা হয়। তাকে সাতদিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। অন্যদিকে ছাত্রদের হাতে নিগৃহীত উপাচার্য মহম্মদ আলি আর আলিয়ায় ফিরতে চান না বলে জানিয়েছেন। যাদবপুরের রসায়ন বিভাগে ফিরে যেতে চান তিনি। রাজ্যপাল তথা রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য জগদীপ ধনকড় এবং শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে নিজের ইচ্ছার কথা জানাবেন আলিয়ার উপাচার্য।
[আরও পড়ুন: বুমেরাং সিপিএমের ‘পাহারায় পাবলিক’, তৃণমূলের দুর্নীতি খুঁড়তে গিয়ে ফাঁস কমরেডদেরই কুকীর্তি!]
মহম্মদ আলি যখন নিজের ইচ্ছার কথা জানাচ্ছেন, একই সময়ে তাঁর প্রতি ন্যায় বিচারের দাবিতে আলিয়ার পার্ক সার্কাস ক্যাম্পাসে অবস্থানে বসেন সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা। তাঁদের দাবি, উপাচার্যকে নিগ্রহের পিছনে যতজন জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করতে হবে। উল্লেখ্য, হস্টেল, ডিজিটাল ক্লাসরুম-সহ একাধিক দাবিতে ১৮৫ দিন ধরে অবস্থান চলছে আলিয়ায়। আন্দোলন গতি পেয়েছে উপাচার্য নিগ্রহের ঘটনায়।
৪ বছর আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলিয়ার উপাচার্য পদে আনা হয়েছিল অধ্যাপক মহম্মদ আলিকে। চলতি মাসেই তাঁর মেয়াদ শেষ। সোমবার পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধির খবর মেলেনি। উপাচার্য এদিন তাঁর উপর হওয়া নির্যাতনের কথা জানাতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন, “একজন শিক্ষক হিসাবে ছাত্রের কাছে অসম্মানিত হওয়া যে কত কষ্টের তা বলে বোঝাতে পারব না। বারবার মনে হচ্ছে আমি কি ব্যর্থ হলাম? এত কটূ কথা শোনার পর আমি আর ওখানে ফিরব না। যেখানে সম্মান নেই সেখানে যাব না। যাদবপুরের উপাচার্যর সঙ্গে কথা হয়েছে। আমি পুরনো জায়গায় ফিরে যাব।”
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষা দপ্তরের অধীনস্থ। দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী মহম্মদ গোলাম রব্বানি এদিন বলেন, “আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় আমার দপ্তরের অধীনে, অথচ উপাচার্য এখনও আমাকে কোনও রিপোর্ট করেননি। এমনকি আমার সেক্রেটারিকেও কিছু জানাননি। সোশ্যাল মিডিয়ায় যা দেখেছি তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। ৬ এপ্রিল ডিপার্টমেন্টে মিটিং ডাকা হয়েছে।” বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এদিন দাবি করেন, অভিযুক্ত ছাত্র গ্রেপ্তার হলেও পিছনে আরও অনেক বড় বড় মাথা আছে।