সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হুঁশিয়ারির পালটায় একেবারে হাতেনাতে প্রতিবাদ৷ সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১৮জন চিকিৎসক ইস্তফা দিলেন৷ মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারিতে কর্মবিরতি ভেঙে কাজে শামিল হলেও, পালটা প্রতিবাদটি হল জোরদার৷ যথাযথ পরিচয় না জেনেই মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে ডাক্তারদেরই ‘বহিরাগত’ বলে চিহ্নিত করলেন? এই প্রশ্ন তুলে আরেক প্রতিবাদে শামিল চিকিৎসকদের একাংশ৷ এনআরএস এবং সাগর দত্ত হাসপাতালের চিকিৎসকরা গণইস্তফার হুঁশিয়ারি দিলেন৷ শুধু তাইই নয়,গণইস্তফার হুঁশিয়ারি দিয়েই সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের ১৮ চিকিৎসক ইস্তফা দিলেন৷ এঁদের বেশিরভাগ মেডিসিন বিভাগের বলে খবর৷ ইস্তফাপত্রে তাঁরা নির্দিষ্ট করে কারণ ব্যাখ্যা করেছেন, যা পরিস্থিতি, তাতে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না৷ সেইসঙ্গে জোরাল দাবি তুললেন, মুখ্যমন্ত্রীকে নিঃশর্তে ক্ষমা চাইতে হবে৷ তবে তাঁদের ইস্তফাপত্র গৃহীত হয়নি বলেও জানা গিয়েছে৷ যা নিয়ে ইতিমধ্যেই যথেষ্ট তোলপাড় পড়ে গিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্যমহলে৷
[আরও পড়ুন: ৪ ঘণ্টার মধ্যে কাজে যোগ না দিলে কড়া ব্যবস্থা, ডাক্তারদের হুঁশিয়ারি মমতার]
এনআরএস হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিবহ মুখোপাধ্যায়কে মারধরের ঘটনার রেশ এত দূর পৌঁছে যাবে, তা খুব একটা ভাবা যায়নি৷ তবে অপ্রত্যাশিতভাবেই তা প্রভাব পড়ল গোটা রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থায়৷ শুধু তাইই নয়, এনিয়ে রাজনীতিও শুরু হয়ে গিয়েছে পুরোদমে৷ তবে এনিয়ে চর্চা পাশে সরিয়ে রেখে এই মুহূর্তে আরও বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াল, চিকিৎসকদের একাংশের ঘোষণা৷ যাঁরা গণইস্তফার হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন৷
বৃহস্পতিবার, দিনের শুরু থেকেই এই ঘটনা নিয়ে জটিলতা দানা বাঁধছিল৷ ভোররাতে লিন্টন হস্টেলে আগুন, তারপর দুপুরে এসএসকেএমে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের সময়সীমা বেঁধে দেন৷ হুঁশিয়ারি দেন, কাজে না ফিরলে এসমা অর্থাৎ এমারজেন্সি মেডিক্যাল অ্যাক্টে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ তাতে সাময়িকভাবে জট কাটিয়ে কাজে ফিরলেও, সমস্যা আরও বেড়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী এসএসকেএম গিয়ে বলেছিলেন, গণ্ডগোলে জুনিয়র ডাক্তাররা নন, হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে বহিরাগতরাই সমস্যা বাঁধিয়েছেন৷ আর তাঁর এই মন্তব্য মোটেই ভালভাবে নেয়নি চিকিৎসকদের একাংশ৷ তাঁদের পালটা দাবি, ঘটনার দিকে যথাযথ গুরুত্ব না দিয়ে পাশ কাটাতে মমতার ‘বহিরাগত’ তত্ব খাঁড়া করেছেন৷ এর জন্য ডাক্তারদের কাছে মুখ্যমন্ত্রীকে নিঃশর্তে ক্ষমা চাইতে হবে৷ এই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন৷ প্রয়োজনে সরকারি চাকরি থেকে গণহারে ইস্তফা দেবেন৷ আর এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে৷ জুনিয়রদের পাশে দাঁড়িয়ে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের সুপারের কাছে ১৮ জন সিনিয়র ডাক্তার ইস্তফাও দিয়েছেন৷ যদিও সেই ইস্তফাপত্র গৃহীত হয়নি বলেও খবর৷
[আরও পড়ুন: জুনিয়র ডাক্তারদের হস্টেলে আগুন, উত্তেজনা ছড়াল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে]
জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ এই ব্যাপার টেনে নিয়ে গেলেন একেবারে রাজ্যপালের দরবারে৷ সমস্যা কাটাতে আজ তাঁদের এক প্রতিনিধি দল গিয়েছেন রাজভবনে৷ তাঁর সমস্যার সমাধানে কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর হস্তক্ষেপ চান৷ সেখানে নিজেদের দাবিপত্র পেশ করার পর রাজভবনের গেটে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তাঁরা৷ জানান, তাঁদের দাবি একেবারেই ন্যূনতম৷ তা পূরণ হলেই পুরোদমে কাজে ফিরবেন৷ জুনিয়র চিকিৎসকদের আরও দাবি, কর্মবিরতির নামে তাঁরা কোনও মুমূর্ষু রোগীকে ফেরাচ্ছেন না৷
The post মুখ্যমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জের পালটা গণইস্তফা! পদত্যাগ সাগর দত্ত হাসপাতালের ১৮ চিকিৎসকের appeared first on Sangbad Pratidin.