সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: ভোট (West Bengal Assembly Election 2021) যত এগিয়ে আসছে রাজ্যের প্রায় প্রতিটি জেলায় রাজনৈতিক সংর্ষের সংখ্যা বাড়ছে। বৃহস্পতিবার রাত্রে তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কোচবিহারের (Coochbihar) সিতাই (Sitai) বিধানসভার ভেটাগুড়ি এলাকায়। সংঘর্ষে তির ধনুক নিয়ে হামলার অভিযোগ উঠেছে। সংঘর্ষের খবর পাওয়া গিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় থেকেও। সেখানে এক আইএসএফ নেতাকে পিটিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ২ জায়গাতেই উত্তেজনা থাকায় এলাকায় পুলিশ (Police) মোতায়েন করা হয়েছে।
ভাঙড়ের এক আইএসএফ (ISF) নেতাকে পিটিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ভাঙড় থানার মাধবপুর এলাকার ঘটনা। অভিযোগ, রাতে দলীয় কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে ভাঙড়ের আইএসএফ নেতা মিন্টু শিকারির উপরে অতর্কিত আক্রমণ করেন কয়েক জন। অভিযোগ এই হামলার পিছনে তৃণমূলের হাত রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মিন্টুকে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়। সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন মিন্টু।
হামলার খবর ছড়িয়ে পড়তেই দলীয় কর্মীরা ছুটে আসেন। পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। সংজ্ঞাহীন অবস্থায় মিন্টুকে উদ্ধার করে নলমুড়ি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে কলকাতা চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। খবর পেয়ে ভাঙড় থানার বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় তৃণমূলের নামে অভিযোগ করছেন আক্রান্ত মিন্টু। যদিও সব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করছে তৃণমূল। তাদের দাবি মিন্টু শিকারি নাটক করছেন। গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই এই ঘটনা এর সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই বলে দাবি তৃণমূলের।
অন্যদিকে ভাঙড় বিধানসভার কাশিপুর থানার মাঝেরহাট গ্রামেও আইএসএফ এবং তৃণমূলের সংঘর্ষ হয়। অভিযোগ ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তৃণমূল এবং আইএসএফ কর্মীরা। এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা রয়েছে। এই ঘটনায় তিন জন গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে কাশিপুর থানার বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদেরকে জিরানগাছা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনায় উভয় পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে।
[আরও পড়ুন: ভোটের মুখে পায়েল সরকারের ম্যানেজারের উপর হামলা, কী বললেন ক্ষুব্ধ BJP প্রার্থী?]
কোচবিহারের ভেটাগুড়ি ২ নম্বর গ্রামপঞ্চায়েতের ফুটানি বাজার এলাকায় ২ রাজনৈতিক দলের সংঘর্ষ শুরু হয়। বিজেপির (BJP) অভিযোগ তাদের ২২ এবং ২৩ মণ্ডল এলাকার যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক নয়ন বর্মনের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। বাড়ি ভাঙচুর করে লুঠপাট করা হয় বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে বিজেপির তরফে। স্থানীয় বিজেপি নেতাদের অভিযোগ এই হামলার পিছনে স্থানীয় তৃণমূল (TMC) নেতাদের হাত রয়েছে। তাঁদের মদতেই বিজেপি নেতা কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালানো হচ্ছে।
তৃণমূলের পালটা অভিযোগ, বিজেপি কর্মীরাই আগে স্থানীয় ৩ তৃণমূল সমর্থকের বাড়িতে হামলা চালায়। বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। সেই হামলায় ২ জন তৃণমূল সমর্থক আহত হয়েছেন। তাঁদের উদ্ধার করে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা। বিজেপি এলাকায় সন্ত্রাস তৈরি করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ তোলা হয় তৃণমূলের তরফে।
একে অপরের বিরুদ্ধে তির-ধনুক নিয়ে হামলার অভিযোগ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপি। সংঘর্ষের খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দিনহাটা থানার পুলিশ। পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকায় রাত থেকেই সেখানে পুলিশ মোতায়েন করে রাখা হয়েছে। তবে হামলার অভিযোগ এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।