শুভঙ্কর বসু: বঙ্গে এত দফা ভোটে কমিশন কী কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা নিয়ে পুলিশ পর্যবেক্ষক এবং জেলার পুলিশ আধিকারিকদের মধ্যে কী কথোপকথন হয়েছে, সেই হোয়াটসঅ্যাপ ফাঁস করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কমিশনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের একাধিক অভিযোগ করেছিলেন। এবার তাঁকে সেই অভিযোগের জবাব দিল নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কমিশনের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে, ভিত্তিহীন, বিভ্রান্তিকর। নির্দিষ্টভাবে ‘তৃণমূলের গুণ্ডা’দের (TMC Goons) গ্রেপ্তারি নিয়ে কমিশনের তরফে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূল নেত্রী অভিযোগ তুলেছেন, তা একেবারেই ঠিক নয়। কমিশন এ ধরনের কোনও নির্দেশ দেয়নি বলেই দাবি দিল্লির কর্তাদের। কমিশনের এই পালটা জবাবে রাজ্যের শাসকদল ও দিল্লি নির্বাচন কমিশনের সংঘাত আরও বাড়ল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একটা বড় অংশ।
শনিবার বোলপুরের গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপ-নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈনের সঙ্গে জেলা পুলিশ আধিকারিকদের একাংশের কথোপকথনের হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp) চ্যাট প্রকাশ্যে আনেন। সাংবাদিকদের সামনে সেই তথ্য এনে নির্বাচন কমিশন কীভাবে পক্ষাপাতমূলক কাজ করছে, তা ফের বোঝানোর চেষ্টা করেন। তাঁর অভিযোগ, প্রত্যেক দফা ভোটের আগে ‘তৃণমূল গুণ্ডাবাহিনী’ এবং দলের দাপুটে নেতা ঘনিষ্ঠদের নজরবন্দি কিংবা গ্রেপ্তারির নির্দেশ দিয়েছেন কমিশনের তরফে নিযুক্ত পর্যবেক্ষকরা। এ নিয়ে পুলিশ মহলের একাংশের উপরও প্রচ্ছন্ন অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, এই হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ফাঁস আসলে বিজেপির উপর পালটা চাপ তৃণমূল নেত্রীর।
[আরও পড়ুন: অক্সিজেনের অভাবে উত্তরপ্রদেশে মর্মান্তিক মৃত্যু সদ্যোজাত যমজের, চাঞ্চল্য হাসপাতাল চত্বরে]
তবে ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই তাঁর অভিযোগের পালটা জবাব দিল কমিশনও। বিবৃতি দিয়ে জানাল, তৃণমূল নেত্রীর সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন। এভাবে বিশেষ কোনও রাজনৈতিক দলের ঘনিষ্ঠদের গ্রেপ্তারির নির্দেশ কমিশন কিংবা কমিশন নিযুক্ত কোনও পর্যবেক্ষক কিংবা আধিকারিক – কেউই দেননি। তবে বঙ্গের ভোট শান্তিপূর্ণ করানোর লক্ষ্যে অশান্তি রুখতে যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার, তা নিয়েছে কমিশন। সেইমতো যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতেই কাউকে গ্রেপ্তার কিংবা কারও বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই সংক্রান্ত যাবতীয় তালিকা এবং তথ্যপ্রমাণ কমিশনের হাতে রয়েছে বলেও প্রেস বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে।