সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অপেক্ষা ছিল তাঁর ফেরার। তিনি ফিরলেন। কিন্তু রাজভবনের সামনে ধরনারত তৃণমূল (TMC) নেতৃত্বের তাঁর সঙ্গে দেখা করার অপেক্ষার অবসান ঘটল কি? রবিবার রাত ৮টা নাগাদ উত্তরবঙ্গ থেকে দমদম বিমানবন্দরে নেমে রাজ্যপাল অবশ্য খোলাখুলি আমন্ত্রণই জানালেন। বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানালেন, ”রাজভবনের দরজা সবার জন্য খোলা। ভোর ৪টে থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত আমি আছি। যে কেউ চাইলে এসে দেখা করতে পারেন।” তবে কি আজই দেখা করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা তৃণমূল প্রতিনিধিদের সঙ্গে? এই প্রশ্নের জবাবে সি ভি আনন্দ বোস (C V Anand Bose) সাফ জানালেন, তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য কেউ আগাম সময় চাননি। এদিন রাজভবনের নর্থ গেট অর্থাৎ ধরনাস্থল এড়িয়ে সাউথ গেট দিয়ে রাজ্যপাল ভিতরে ঢুকে যান।
দিল্লিতে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সময় দিয়েও দেখা করেননি। ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকার দাবিতে আন্দোলনের রেশ তাই কলকাতাতেও এনেছে তৃণমূল। একই দাবিতে রাজ্যপালের সাক্ষাৎপ্রার্থী দলের প্রতিনিধিরা। আর রাজ্যপালের অনুপস্থিতিতে তাই রাজভবনের সামনেই ধরনা শুরু করেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার চতুর্থ দিনে রাজভবনের তরফে আচমকাই মুখ্যসচিবকে চিঠি পাঠিয়ে জানতে চাওয়া হয়, তার অনুমতিতে রাজভবনের সামনে ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে এই ধরনা চলছে?
[আরও পড়ুন: দিল্লি দাঙ্গা নিয়ে রায় দিয়ে কেন্দ্রের রোষে! ‘জানি না আমার কী দোষ ছিল’, বলছেন বিচারপতি]
রবিবার সন্ধেবেলা ধরনামঞ্চ এর জবাবে পালটা প্রশ্ন তুলেছেন অভিষেক। তাঁর প্রশ্ন, ”যখন দলে দলে বিজেপি নেতারা রাজভবনে নালিশ করতে যান, রাজভবনের লন, করিডরে ঘোরাঘুরি করেন, গেটের বাইরে জমায়েত করে সাংবাদিক বৈঠক করেন, তখন তো তাঁর আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কিছু মনে হয় না। আমাদের ধরনার বেলায় কেন এই প্রশ্ন? আমরা মানুষের স্বার্থে রাস্তায় রয়েছি।”
[আরও পড়ুন: ‘আমি আর ক’দিন? বিশ্বভারতীকে আপনারা বাঁচান’, আবেগপ্রবণ উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী]
এই পরিস্থিতিতে এদিন কলকাতায় ফিরে তৃণমূলের দাবি নিয়ে কী অবস্থান নেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস, সেদিকে তাকিয়ে ছিলেন সকলে। তবে তাঁকে এ নিয়ে বিশেষ চিন্তিত মনে হল না। দমদম বিমানবন্দরে নেমে জানালেন, তিনি বেড়াতে নয়, বন্যাবিধ্বস্ত মানুষজনের পাশে ছিলেন গত ৪ দিন। আর রাজভবনের দরজা সকলের জন্য খোলা। যে কোনও রাজনৈতিক দলের নেতারা আসতে পারেন। ভোর ৪টে থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত আমি আছি। আসুন, দেখা করুন।” শনিবার দার্জিলিংয়ের রাজভবনে তৃণমূলের তিন প্রতিনিধির সঙ্গে দেখা করে আশ্বাস দিয়েছিলেন, বাংলার ১০০ দিনের কাজের বকেয়ার দাবিতে তিনি দিল্লির সঙ্গে কথা বলবেন। এদিনও ফিরে সেই আশ্বাসই দিলেন। তবে এত কিছু বললেও তৃণমূলের সঙ্গে সাক্ষাৎ যে এড়ালেন, তা স্পষ্ট হল তাঁর নর্থ গেট এড়ানোয়। রাজ্যপাল এদিন রাজভবনের সাউথ গেট দিয়ে ঢুকলেন ভিতরে।