সন্দীপ চক্রবর্তী: দস্তাবেজের জমানা শেষ। রাজ্য সরকারি কর্মীদের চাকরি সংক্রান্ত যাবতীয় ঠিকুজি–কুলুজি লেখা কাগজের বোঝা ঝেড়ে ফেলার কাজে আর দেরি করতে চায় না নবান্ন। যে কারণে নতুন বছর পড়ার আগেই পুরনো ম্যানুয়াল সার্ভিস বুকের পাট চুকিয়ে ই–সার্ভিস বুক চালুর আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া সেরে ফেলার নির্দেশ জারি হল। এবং এই প্রেক্ষিতে কর্মীদের তরফে তোড়জোড়ও তুঙ্গে উঠেছে। কারণ অর্থ দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিবের ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, তাঁদের ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পুরনো সার্ভিস বুকের নকল বা প্রত্যয়িত কপি সংশ্লিষ্ট অফিস–হেডের কাছে জমা দিতে হবে। সেগুলি হাতে পেলেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ডিজিটাইজেশনের প্রক্রিয়া শুরু করবে।
বস্তুত রাজ্য প্রশাসনের সমস্ত কাজকর্মকে ডিজিটাল মাধ্যমে নিয়ে আসার যে উদ্যোগ শুরু হয়েছে, ই–সার্ভিস বুক তার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। ছুটিছাটার বিষয়ও অনলাইনের আওতায় আসছে। প্রশাসনের নির্দেশ, এবার থেকে ক্যাজুয়াল লিভ বাদে সব ছুটির আবেদন করতে হবে অনলাইনে, এইচআরএমএস পদ্ধতিতে। বলা ভাল, এভাবেই হার্ড কপি বা কাগজ পদ্ধতির অবসান ঘটছে। যদিও পুরোপুরি এখনই তা বন্ধ করা যাচ্ছে না। যতদিন না নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করা হচ্ছে, ততদিন এভাবেই আবেদন করতে হবে বলে অফিস–হেড, কন্ট্রোলিং অফিসার ও কর্মীদের কাছে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। পাঁচ নভেম্বরের পর ক্যাজুয়াল লিভ ছাড়া অন্য কোনও ছুটির আবেদন করিনি বা পাঁচ নভেম্বরের পরের ক্যাজুয়াল লিভ বাদে অন্য ছুটির আবেদন কেবল এইচআরএমএস–এর মাধ্যমেই করেছি বলে অনলাইনে ‘স্বীকারপত্র’ জমা দিতে বলা হয়েছে কর্মীদের।
[আরও পড়ুন: তিন একর পর্যন্ত জমির সত্ত্ব পাবেন উদ্বাস্তুরা, বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর]
এছাড়াও যে সব কর্মীর কোনও কোনও আবেদন আটকে পড়ে রয়েছে বা জমা করা যায়নি বা হারিয়ে গিয়েছে, এমন ক্ষেত্রে ই–সার্ভিস বুক চালু হলেও আবেদন জমা করা যাবে। ই–সার্ভিস বুক চালু হলেও এই আবেদন ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত জমা দেওয়া যাবে। ‘হার্ড কপি’ বা ফিজিক্যাল কপি অর্থাৎ কাগজের গুরুত্ব বা ভূমিকা একেবারেই উঠে যাবে, তেমনটা নয়। আদালতের নির্দেশের কারণে বা অন্য উপযুক্ত কারণে দরকার পড়লে প্রিন্ট আউটে নির্দিষ্ট অফিসিয়ালের সই থাকতে হবে। ই–সার্ভিস বুক চালু হলে রাজ্য সরকারি কর্মীদের আর সার্ভিস বুক হারানোর ঝক্কি বা দুশ্চিন্তা নেই। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন কারণে সার্ভিস বুক নষ্ট হয়ে যাওয়া বা হারিয়ে যাওয়ার ফলে সরকারি কর্মীদের অবসর পরবর্তী সুবিধা পেতে সমস্যা হয়েছে। দেরি হয়েছে পেনশন পেতে। অনলাইন সার্ভিস বুকের কাজ সেই কারণেই। ই-সার্ভিস বুক বা অনলাইন সিস্টেম অফ ম্যানেজমেন্ট অফ সার্ভিস বুক চালু হলে এই সমস্যাগুলির সুরাহা হবে।
সার্ভিস বুকের নয়া ইউনিফর্ম ফরম্যাট চালু হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি এ ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করবে নবান্ন। এরপর থেকে বর্তমান সার্ভিস বুক আপডেট করতে হবে না। ক্যাজুয়াল লিভ ছাড়া অন্য ছুটির আবেদন, এলটিসি বা পে ফিক্সেশন হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বা এইচআরএমএস–এর মাধ্যমে করতে হবে। ডিজিটাল ফরম্যাটই যে কোনও ক্ষেত্রে যোগ্য সার্ভিস রেকর্ড হিসাবে গণ্য হবে। সার্ভিস বুকের ডুপ্লিকেট কপি নিয়ে সংশ্লিষ্ট অফিসারের কাছে আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে। সার্ভিস বুক অনুমোদনের প্রক্রিয়া আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করতে হবে।
[আরও পড়ুন: নাইট ক্লাবে মাদক পাচারের মাধ্যম এসকর্ট সুন্দরী, গোয়েন্দাদের জেরায় স্বীকারোক্তি কারবারির]
The post এবার ছুটি চাইতে হবে অনলাইনে, রাজ্য সরকারি কর্মীদের নয়া নির্দেশ নবান্নর appeared first on Sangbad Pratidin.