রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: রাজ্য সরকার কৃষকদের বঞ্চনা করছে, বারবার এই অভিযোগে সুর চড়িয়েছে বিরোধীরা। একই অভিযোগের সুর শোনা গিয়েছে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের (Jagdeep Dhankhar) গলাতেও। একাধিকবার টুইটেও এ বিষয়ে তোপ দেগেছেন তিনি। মেদিনীপুর জেলা সফরে গিয়েও সেই একই ইস্যুতে আক্রমণের সুর চড়ালেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান।
ধনকড়ের অভিযোগ, রাজ্যের কৃষকরা (Farmers) কার্যত হেনস্তার শিকার। তাঁরা চাষ করে আর্থিক সুবিধা পাচ্ছেন না। অথচ কেন্দ্র সরকার ১০০ শতাংশ সাহায্য করছে তাঁদের। তবে রাজ্য সরকার তাতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে অভিযোগ রাজ্যপালের। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর কৃষক সম্মান নিধির সুবিধা থেকে রাজ্য সরকার কৃষকদের রাজনৈতিক পরিকল্পনামাফিক দূরে সরিয়ে রেখেছে বলে বারবার অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা। তার পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার নবান্ন থেকে কেন্দ্রের এই প্রকল্প রাজ্যে চালু করার অনুমতি দেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি দাবি জানান কেন্দ্রের কৃষি আইন প্রত্যাহারেরও।
[আরও পড়ুন: পাখির চোখ নন্দীগ্রাম, আগামী ১৮ জানুয়ারি সভা করতে পারেন মমতা]
এছাড়াও এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি খোঁচা দেন রাজ্যপাল। সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ‘ব্যর্থ’ বলে তোপ দাগেন। বহিরাগত ইস্যুতেও আরও একবার সুর চড়ান রাজ্যপাল। ভারতের মধ্যে কেউ বহিরাগত নন বলে স্পষ্ট করে দেন। তাঁর মতে, “ভারতের মধ্যে কেউ বহিরাগত নয়। এমন ভাবনা সংবিধানের মূল ধারণায় কুঠারাঘাত করা। সংবিধানের বিপরীত ভাবনার কোনও কাজ করা উচিত নয়।” আমফান-সহ একাধিক ক্ষেত্রে রাজ্যের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগেও সরব হন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, “আমফানে আর্থিক সাহায্য, করোনা মোকাবিলার বরাদ্দে দুর্নীতি হয়েছে। আদালত এ নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল।” আমফান নিয়ে আগাম সতর্কতা থাকলেও রাজ্য সরকার মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছে বলেও অভিযোগ ধনকড়ের। তাঁর প্রশ্ন, “দুর্যোগের পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও, কেন প্রস্তুতি ছিল না রাজ্য?”
দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে বারবার সংঘাতে জড়িয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। প্রশাসনিক এবং শিক্ষাক্ষেত্রের দুর্নীতির অভিযোগে একাধিকবার সুর চড়িয়েছেন তিনি। রাজভবন-নবান্নের মধ্যে টুইট-পালটা টুইট কিংবা পত্রবোমা আদানপ্রদানও লেগেই থাকে। মেদিনীপুরের সাংবাদিক বৈঠকের পর সেই সংঘাতের আগুনে যে ঘি পড়ল, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।