সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: সভা ঘিরে ইট-পাটকেল। তারপর প্রতিরোধ। এরপর বাড়ি ভাঙচুর। শনি-রবিবার পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর দুই ব্লকের নতুনডি গ্রাম পঞ্চায়েতের কলাগাড়ায় সিপিএম-তৃণমূলের ঝামেলায় এভাবেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। যা পুরুলিয়ার পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে এই প্রথম কোনও ঝুট-ঝামেলা। আর তারপরেই গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই সিপিএম প্রার্থী সোমবার সদলবলে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলেন।
ওই এলাকায় নির্বাচনে (WB Panchayat Election) তৃণমূলের সঙ্গে সিপিএমের লড়াই হওয়ায় আর কোনও রাজনৈতিক দলের প্রার্থী না থাকায় কার্যত দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনে জয় পেতে চলেছে শাসক দল তৃণমূল। এদিন রঘুনাথপুর দুই ব্লকের তৃণমূল কার্যালয়ে হয় যোগদান পর্ব। পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা পুরুলিয়া জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ স্থায়ী সমিতির বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, “ওই দুই সিপিএম প্রার্থী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের শরিক হতে ভোটের আগেই তৃণমূলে যোগদানের ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। তাই আমরা তাঁদেরকে দলে স্বাগত জানাই।”
[আরও পড়ুন: Panchayat Poll 2023: পর্যাপ্ত বাহিনী না এলে দফা বাড়ানোর আরজি নিয়ে হাই কোর্টে নওশাদ]
তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করা ওই দুই সিপিএম প্রার্থীর নাম নতুনডি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮ নম্বর সংসদের আয়েশা বিবি ও ৯ নম্বর সংসদের শেখ মহরাম। তাঁদের সঙ্গে ওই এলাকার আরও তিন সিপিএম নেতা রমজান আনসারি, গফফর আনসারি, নঈম আনসারী শাসক দলে যোগ দেন। সিপিএম প্রার্থী শেখ মহরাম বলেন, “আমরা আগে তৃণমূল করতাম। আমাদের মধ্যে স্থানীয় স্তরে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। সেই জন্য আমরা সিপিএমে গিয়েছিলাম। সিপিএমের তরফে মনোনয়ন জমা করি। কিন্তু এখন আমাদের ভুল বোঝাবুঝি কেটে গিয়েছে। তাই আমরা তৃণমূলে যোগদান করলাম। দলের হয়ে ভোট প্রচার করব।” এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া নিতে সিপিএমের জেলা সম্পাদক তথা বামফ্রন্টের জেলা আহ্বায়ক প্রদীপ রায়কে একাধিকবার ফোন করা হলেও কোনও সাড়া দেননি।
গত শনিবার ওই কলাগাড়া গ্রামে সিপিএমের সভা ছিল। অভিযোগ, সেই সভা ভেস্তে দিতে তৃণমূল ইট ছোঁড়ে। পালটা প্রতিরোধ করে সিপিএম। তারপর রবিবার ওই গ্রামে তৃণমূল কংগ্রেস হামলা চালিয়ে সিপিএম নেতা-কর্মী-সমর্থকদের প্রায় ৩০টি বাড়ি ভেঙে দেয় বলে অভিযোগ। এরপরে এই যোগদানকে ঘিরে জেলা রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তৈরি হয়েছে। কিন্তু সেই জল্পনায় জল ঢেলে দিয়ে দুই সিপিএম প্রার্থী জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা স্বেচ্ছায় ঘাসফুলের পতাকা ধরলেন।