নব্যেন্দু হাজরা: কাশফুলে সেজে উঠেছে গ্রাম বাংলার নদীর ধার। মেঘ কাটলেই উঁকি দিচ্ছে নীল আকাশ, পেঁজা তুলোর মতো মেঘের ভেলা। এক মাসও বাকি নেই যে অপেক্ষার। তারপরেই ঢাকে কাঠি। পাড়ায় পাড়ায় মণ্ডপ। দেবী দুর্গার আবাহন (Durga Puja)। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবে মেতে উঠবে গোটা রাজ্য। এবার যাঁরা পুজোয় থাকছেন শহর কলকাতাতেই, পুজোর ছুটিতে দূর পাহাড়-সমুদ্র-জঙ্গলে বেড়াতে না গিয়ে শহর ঘুরে আনন্দে মাততে চান। তাঁদের জন্য একাধিক প্যাকেজে অভিনব পুজো পরিক্রমার আয়োজন করেছে রাজ্যের পর্যটন দপ্তর (WBTDCL)। সহযোগিতায় তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর। চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক পর্যটন দপ্তরের প্যাকেজ ট্যুরগুলো (Durga Puja Tour Packages) সম্পর্কে।
শহর কলকাতায় মাতৃদর্শনে দু’টি আলাদা প্যাকেজে পুজো পরিক্রমা বা দুর্গাপুজো ট্যুরের সুযোগ পাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। সেগুলো হল ‘উদ্বোধনী’ এবং ‘সনাতনী’। প্রথমটি বারোয়ারি, দ্বিতীয়টি বনেদি বাড়ির পুজো দেখার সুযোগ। পাশাপাশি থাকছে ‘হুগলি সফর’-এরও ব্যবস্থা।
[আরও পড়ুন: পিঠে PFI লেখার অভিযোগ ভুয়ো, গুজব ছড়ানোয় কেরলের সেনাকর্মীকেই গ্রেপ্তার পুলিশের]
উদ্বোধনী: ১৭ ও ১৮ অক্টোবর অর্থাৎ তৃতীয়া ও চতুর্থীতে সারা রাত এসি বাসে চেপে কলকাতার প্রখ্যাত বারোয়ারি পুজোর দেখার সুযোগ। রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা অবধি চলবে মাতৃদর্শন। রবীন্দ্রসদন চত্বর থেকে ছাড়বে বাস। উত্তর ও দক্ষিণের প্রায় অধিকাংশ বড় পুজোর দেখার সুযোগ পাবেন দর্শনার্থীরা। যার মধ্যে রয়েছে কলেজ স্কোয়ার, মহম্মদ আলি পার্ক, কাশী বোস লেন, বাদামতলা আষাঢ় সংঘ, ৬৬-র পল্লী, মুদিয়ালী, শিব মন্দির, একডালিয়া, সিংহী পার্ক, হিন্দুস্তান রোড এবং রাজডাঙা নবদয় সংঘ। এই প্যাকেজের মধ্যেই থাকছে রাতের খাবারের ব্যবস্থা। সব মিলিয়ে মাথাপিছু খরচ ২,০৯৯ টাকা।
সনাতনী: ২১, ২২ এবং ২৩ অক্টোবর অর্থাৎ সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীতে দিনের বেলা এসি বাসে চেপে কলকাতার বনেদি বাড়ির ঠাকুর দেখার সুযোগ। সকাল ৮টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা অবধি চলবে সাবেকি মায়ের দর্শন। এক্ষেত্রেও রবীন্দ্রসদন চত্বর থেকে ছাড়বে বাস। ঘুরিয়ে দেখানো হবে খেলাত ঘোষ বাড়ি, শোভাবাজার রাজ বাড়ি, ছাতুবাবু লাটুবাবুর বাড়ি (অষ্টমীতে বাদ), চন্দ্র বাড়ি, রানি রাসমণির বাড়ি, ঠনঠনিয়া দত্ত বাড়ি এবং জোড়াসাঁকো দাঁ বাড়ি। এই প্যাকেজের মধ্যেই থাকছে সকালের জলখাবারের ব্যবস্থা। মাথাপিছু খরচ ১,৯৯৯ টাকা।
[আরও পড়ুন: যোগীরাজ্যে লাফিয়ে বাড়ছে লাভ জেহাদ, জমি জেহাদ! আশঙ্কা প্রকাশ আরএসএসের বৈঠকে]
এছাড়াও ২১, ২২ এবং ২৩ অক্টোবর অর্থাৎ সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীতে ‘হুগলি সফরে’ জেলার একাধিক বনেদি তথা জমিদার বাড়ির পুজো দেখার সুযোগ পাবেন দর্শনার্থীরা। সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ৮টা অবধি চলা ওই পুজো পরিক্রমায় থাকছে জলখাবার ও মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন। খরচ পড়বে মাথাপিছু ৩,৪৯৯ টাকা।
উল্লেখ্য, এছাড়াও পুজো উপলক্ষে ৬৫টি আলাদা জেলার ট্যুর প্যাকেজ ঘোষণা করেছে রাজ্যের পর্যটন দপ্তর। এর জন্য ভ্রমণ পিপাসুদের পছন্দের ১৬টি জেলাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। ট্যুরিস্ট স্পট হিসাবে যেমন বেছে নেওয়া হয়েছে সবুজ জঙ্গল, পাহাড় ও সমুদ্রসৈকত, তেমনই ধর্মীয় তথা ঐতিহাসিক স্থানে বেড়ানোরও সুযোগ পাবেন উৎসুক পর্যটকরা। পুজোর প্যাকেজ ট্যুর এবং জেলা ভ্রমণ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য মিলবে পর্যটন দপ্তরের ওয়েবসাইট wbtdcl.com-এ। পছন্দের প্যাকেজ বুক করতে পারবেন ওয়েবসাইটের মাধ্যমেই।