গোবিন্দ রায়: ফের কলকাতা হাই কোর্টে ভর্ৎসিত ইডি, সিবিআই। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত কুন্তল এবং নীলাদ্রির জামিন মামলায় ক্ষুব্ধ হাই কোর্ট। তদন্তকারী আধিকারিকদের কার্যত ব্যর্থ বলে তোপ বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির।
সোমবার তিনি আরও বলেন, “দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়তে হলে অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করার হার বাড়াতে হবে। যে দেশে এই হার যত বেশি তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে তত এগিয়ে। জাপান, সিঙ্গাপুরের দিকে তাকিয়ে দেখুন। সেখানে দোষী সাব্যস্ত করার হার ৮০ শতাংশের বেশি। দুর্নীতির অভিযোগ আসলে দ্রুত মামলার তদন্ত করে বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। নাহলে কখনই দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করা যাবে না। কুন্তল ঘোষের কাছ থেকে যে টাকা উদ্ধার হয়েছে সেটা এই ব্যাপক দুর্নীতির পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ। কুন্তল ঘোষ বা এই ধরনের অভিযুক্তদের নির্দিষ্ট কোনও আয়ের উৎস নেই। তাহলে তাদেরকে প্রমাণ করতে দিন যে তাদের এই অবৈধ সম্পদের উৎস কী?”
ইডি ও সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, “CBI এবং ED র একত্রে কাজ করা উচিত। আমি যদি কোন জনপ্রতিনিধির নাম করে কোন ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করি সেটাই একটা অপরাধ। সেই জনপ্রতিনিধির সঙ্গে আমার যোগাযোগ আছে না নেই সেটা কোন ধর্তব্যযোগ্য বিষয়ই নয়। দুর্নীতিদমন আইনের ধারা যুক্ত করার ক্ষেত্রে হয় তদন্তকারী আধিকারিকরা হয় তাদের অজ্ঞতা দেখিয়েছেন আর নাহলে তারা অভিযুক্তদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছেন। আপনারাই এই অভিযুক্তদের প্রতি নরম মনোভাব দেখিয়েছেন। আমি তদন্তকারী সংস্থার অধিকর্তাদের বলব বিষয়টি দেখতে। শুধুমাত্র আদালতের প্রত্যক্ষ নজরদারির কারণেই এই দুর্নীতি সামনে এসেছে। এখন তদন্তকারী সংস্থার যদি এই ভূমিকা হয় তাহলে আদালত সেটা হালকাভাবে দেখবে না।”
[আরও পড়ুন: সন্দেশখালিতে CBI-ই বহাল, ‘শাহজাহানকে গ্রেপ্তারে এত দেরি কেন’, রাজ্যকে ‘সুপ্রিম’ প্রশ্ন]
অবিলম্বে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার কথা বলেন বিচারপতি। তাঁর প্রশ্ন, “কেন বিচারপ্রক্রিয়া এখনও শুরু করা হয়নি? একজন সাক্ষী নিয়ে আসুন যে এদের টাকা দিয়েছে। সেটাই বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার জন্য যথেষ্ট। অযথা তদন্ত বিলম্বিত করে মানুষের স্মৃতি থেকে এই ঘটনা মুছে যেতে দেবেন না। এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতাকে উপহাসে পরিণত করবেন না।” নীলাদ্রি ঘোষের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি বাগচির মন্তব্য, “কুন্তল ঘোষের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তার কতজন ভাইবোন সরকারি চাকরি দেওয়ার জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন তা নিয়ে সাক্ষী দিন। আমরা আপনাকে জামিন দেব।” সওয়াল জবাব শেষে ইডি, সিবিআইয়ের রিপোর্ট তলব করে আদালত। আগামী তিন সপ্তাহ পর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।