সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অগ্নিগর্ভ মণিপুরে (Manipur) হামলা মন্ত্রীর বাড়িতে। বুধবার মণিপুর মন্ত্রিসভার একমাত্র মহিলা সদস্য কাংপোকপি কেন্দ্রের বিধায়ক নেমচা কিগপেনের বাড়ি জ্বালিয়ে দিল দুষ্কৃতীরা। যদিও সেই সময় মন্ত্রী বাড়ি ছিলেন না। ফলে প্রাণে বেঁচে যান। উত্তরপূর্বের রাজ্যে মেইতে-কুকি জনগোষ্ঠীর সংঘর্ষে এর আগেও একাধিক বিধায়কের বাড়িতে হামলা তথা আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বুধবারের ঘটনার পর মনে করা হচ্ছে, রাজ্যের হাই প্রোফাইল মন্ত্রীরাও আর সুরক্ষিত নন। এদিকে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে সেনা।
বুধবারই কাংপোকপি জেলার খামেলক গ্রামে ভয়াবহ হিংসার বলি হন ১১ জন। আহত ১৫ জনের বেশি। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র সঙ্গে নিয়ে গভীর রাতে ওই গ্রামে হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র থেকে এলোপাথাড়ি গুলি চালানো হয়। সেই সময় বহু গ্রামবাসীই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন কিংবা রাতের খাওয়া সারছিলেন। অতর্কিত আক্রমণে লন্ডভন্ড হয়ে যায় গ্রাম। এর পরেই মণিপুর মন্ত্রিসভার একমাত্র মহিলা সদস্য নেমচা কিগপেনের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। কিগপেন কুকি গোষ্ঠীর জনপ্রতিনিধি। মনে করা হচ্ছে, মেইতেইরাই তাঁর বাড়িতে হামলা চালিয়েছে।
[আরও পড়ুন: দোরগোড়ায় ‘বিপর্যয়’, আশঙ্কায় গুজরাট উপকূল, সরানো হল ৭৪ হাজার মানুষকে]
এদিকে অশান্ত মণিপুরে ১২০০ পুলিশকর্মী কাজে আসছেন না! জানা গিয়েছে, জাতি হিংসায় উত্তপ্ত রাজ্যের পুলিশকর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বাধ্য হয় সরকার বার্তা দিয়েছে, “যেখানে নিরাপদ মনে করছেন, সেখানেই কাজে যোগ দিন!” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হিংসাত্মক ঘটনা শুরু হতেই পুলিশকর্মীরা দলে দলে নিজের এলাকায় ফিরতে শুরু করেন। অনেকেই আর কাজে যোগ দেননি। যা অরাজক পরিস্থিতিতে রাজ্য প্রশাসনের অস্বস্তি আরও বাড়াচ্ছে।
[আরও পড়ুন: আর যেন রক্তাক্ত না হয় দেশ, গালওয়ান সংঘাতের বর্ষপূর্তিতে বৈঠকে সেনা]
উল্লেখ্য, কুকি-মেতেই সংঘর্ষে অশান্ত মণিপুর। সেখানকার ‘মেতেই’ সংখ্যাগরিষ্ঠ উপজাতির তফসিলি জাতির স্বীকৃতির দাবি নিয়ে আন্দোলন ওই ছোট্ট রাজ্যে নাগা-কুকি জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে পালটা প্রত্যাঘাতের জন্ম দিয়েছে। আর তা ঘিরেই রক্তাক্ত লড়াই, কারফিউ, পুলিশের গুলি- গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যার সাক্ষী গোটা দেশ। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি ঘোরালো হয়েছে। এছাড়াও মায়ানমার থেকে কুকি জঙ্গিরা এসে আগুনে ঘি ঢালছে।