রুপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: দুদিনে দুই বিধায়কের দলত্যাগ। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষের দল ছাড়ার চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই গেরুয়া শিবির ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বাদগার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস (Bishwajit Das)। পরপর দুই বিধায়ক শাসক শিবিরে চলে যাওয়ায় তা দলের কাছে একটা ধাক্কা বলেই মনে করছে বঙ্গ বিজেপির একাংশ। এভাবে দলত্যাগীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে এই হুঁশিয়ারি দলের তরফে দেওয়া হলেও পার্টির পুরনো নেতা-কর্মীদের একাংশ কিন্তু প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। শাসক শিবির ভাঙিয়ে এনে বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী করে কী লাভ হল? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিজেপির (BJP) আদি শিবির। এরই মধ্যে আবার পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে টুইট করে তোপ দেগেছেন ‘বিদ্রোহী’ নেতা তথাগত রায়।
রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য মঙ্গলবার জানিয়েছেন, দল ছেড়ে যারা চলে যাচ্ছেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবেই। ইতিমধ্যেই দুই দলত্যাগীকে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) নোটিস পাঠিয়েও দিয়েছেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) বক্তব্য, “বিশ্বজিৎ দাস ও তন্ময় ঘোষ প্রথম থেকেই পার্টির মধ্যে খাপ খাওয়াতে পারছিলেন না। কেউ ভয়-ভীতি বা মামলার ভয়ে যাচ্ছেন। কেউ আবার চলে যাচ্ছেন বিজেপি ক্ষমতায় আসেনি বলে। কেউ বাচ্চা ছেলে নয়। তাদের বাধ্যবাধকতা থাকতেই পারে। পার্টি ঠিক আছে। এক-আধজন চলে গেলে কিছু যায় আসে না।” ভবিষ্যতে আর কেউ যাবে না বলেই দিলীপবাবু মনে করেন।
[আরও পড়ুন: ‘বিজেপিতে কাজের পরিবেশ নেই’, তৃণমূলে যোগ দিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন বাগদার বিধায়ক]
এদিকে, চব্বিশঘন্টার মধ্যে দুই বিধায়ক দল ছাড়ায় যথেষ্ট অস্বস্তিতে রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে দলের রাজ্য নেতা তথাগত রায়ের (Tathagata Roy) টুইট। তিনি বলছেন, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন, বিশেষ করে প্রার্থী চয়ন, দলের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে। বিধানসভা নির্বাচনে এই প্রার্থী বাছাই নিয়ে শুধু তথাগতবাবুই নন, গেরুয়া শিবিরের আদি নেতারাও শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন। প্রার্থী বাছাইয়ে যে ভুল ছিল তা নিয়ে দলীয় বৈঠকে রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশের সামনেই সরব হয়েছিলেন জেলার নেতারা।
[আরও পড়ুন: ‘নোবেল পুরস্কার পাবেন Mamata Banerjee’, তৃণমূল নেতার দাবি ঘিরে জোর চর্চা]
বিধায়কদের দল ছাড়া নিয়ে দলের আদি নেতাদের মধ্যে অন্যতম বর্তমানে রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি রাজকমল পাঠকের বক্তব্য, “ক্ষমতার লোভে অনেকে এসেছিলেন। দল রাজ্যে ক্ষমতায় না আসায় তারা দল ছাড়ছেন। উচ্চ নেতৃত্বকে আগে সচেতন করেছিলাম। এটা থেকে শিক্ষা নিয়ে দলের ভবিষ্যত পদক্ষেপ করা হলে ভাল।” বিজেপিও তো বিভিন্ন রাজ্যে ভোটের আগে দল ভাঙিয়েছে। এ প্রসঙ্গে এদিন শমীক ভট্টাচার্যর যুক্তি, পদত্যাগ করেই কংগ্রেস থেকে বিধায়ক-সাংসদরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। আর বাংলায় বিজেপি যাদের দলে নিয়েছিল ভোটের আগে নিয়েছিল। তারা সকলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। শাসকদলকে শমীকের খোঁচা, অনেকেই বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন তাদের অনেকেই এখন রাজ্যের মন্ত্রী।