দীপঙ্কর মণ্ডল: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব পরা নিয়ে বিতর্ক কর্ণাটকের সীমানা পেরিয়ে ছড়িয়েছে গোটা দেশে। উত্তাল হয়েছে কলকাতাও। শনিবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এ প্রসঙ্গে প্রশ্নের উত্তরে বললেন, “আমাদের রাজ্যেও প্ররোচনা ছিল। তবে তা আমরা আটকে দিয়েছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা হিজাবের পক্ষে এ রাজ্যে সরব হয়েছেন। পোস্টার-ব্যানার নিয়ে রাস্তায় নেমে তাঁদের বার্তা, ‘হিজাব (Hijab) আমার সাংবিধানিক অধিকার। রক্ত চাই রক্ত নাও, আমাদের অধিকার ফিরিয়ে দাও।’ মুসলিম ছাত্রীদের ক্লাসরুমে হিজাব পরা নিয়ে কর্ণাটকে তুমুল বিতর্ক চলছে। কলেজ কর্তৃপক্ষকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে সে রাজ্যের সরকার। কিছু কলেজ হিজাব পরে ছাত্রীদের কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশে অসুবিধা নেই বলেও জানিয়ে দিয়েছে। তবে ওই পোশাক পরে ক্লাস করা যাবে কিনা তা স্পষ্ট হয়নি। মুসলিম ছাত্রীদের দাবি, হিজাব পরেই ক্লাস করার অনুমতি দিতে হবে। এসবের মাঝে কলেজগুলিতে মাথাচাড়া দিয়েছে পালটা প্রতিবাদ। হিন্দুত্ববাদী ছাত্র সংগঠনের দাবি, হিজাব পরে ক্লাস করা যাবে না। পালটা তারাও গেরুয়া উত্তরীয় পরে প্রতিবাদ শুরু করে। হিজাব ইস্যুতে পক্ষ-বিপক্ষ নানা মত তৈরি হয়েছে।
[আরও পড়ুন: স্কুলে পিপিপি মডেল নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি, সাফ জানালেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু]
রাজনীতিবিদরাও মাঠে নেমেছেন সমর্থন বা বিরোধিতায়। এই পরিস্থিতিতে গত সপ্তাহে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যায়, কর্ণাটকের (Karnataka) একটি কলেজে স্কুটি চড়ে এক মুসলিম ছাত্রী ক্যাম্পাসে ঢোকার পর তাঁর উদ্দেশে ছাত্ররা ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিচ্ছেন। ছাত্রীটিও পালটা ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনিতে সুর চড়ান। ছাত্রীর ওই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর হিজাব বিতর্কের আঁচ আরও বাড়ে।
[আরও পড়ুন: বেসরকারি স্কুলে এবার দিতে হবে পুরো বেতন, হাই কোর্টের রায়ে অভিভাবকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া]
কর্ণাটকের সেই ইস্যু আছড়ে পড়েছে এ রাজ্যেও। বাংলা আকাদেমিতে এদিন সাংবাদিক বৈঠকে এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়। তিনি উত্তর দেওয়ার আগে সাহিত্যিক আবুল বাশারকে (Abul Bashar) কিছু বলতে অনুরোধ করেন। সাহিত্যিকের বক্তব্য, “ইসলামে কোন বিষয়ে কড়াকড়ি নেই। পাঁচবার নামাজের কথাও নেই। শালীন পোশাকের কথা বলা হয়েছে। হিজাব নিয়ে যা হচ্ছে তা অর্থহীন। কোরআন একটি ছোট্ট বই। জানতে চাইলেই আমরা জানতে পারব। শুধু হিজাব নয়, দাড়ির সঙ্গেও ইসলামের সম্পর্ক নেই। নান্দনিকভাবে আমরা তা ব্যবহার করতে পারি।” ব্রাত্য (Bratya Basu) বলেন, “সব ধর্মের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। এখানে মানুষ শান্তি চায়। এখানে উসকানি যেমন আছে ভালবাসাও আছে। কালো দিক যেমন আছে, সাদা দিকও আছে। তবে শান্তির প্রতি যে মানুষ শ্রদ্ধাশীল তা প্রমাণিত হয়েছে।”