দীপঙ্কর মণ্ডল: সেনেট বৈঠক স্থগিত হওয়া সত্ত্বেও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আচমকা সফর রাজ্যপালের। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা মিলল না উপাচার্য, সহ-উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রারের। পেলেন না বসার চেয়ারও। পরিকল্পনামাফিক তাঁকে অপমানের চেষ্টা করা হয়েছে বলেই অভিযোগ জগদীপ ধনকড়ের। উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়কে রাজনীতির জায়গায় পরিণত করবেন না বলেই পরামর্শ রাজ্যপালের।
বুধবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবতর্নে ডিলিট কারা পাবেন তা নিয়ে নীতি নির্ধারক সেনেটের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। তাতে আসার কথা ছিল রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে রাজভবনকে জানিয়ে দেওয়া হয় অনিবার্য কারণে ওই বৈঠক স্থগিত করা হল। কিন্তু এদিন সকালে রাজভবন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে জানানো হয় দুপুরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীপ ধনকড়। তাঁকে স্বাগত জানাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে উপস্থিত ছিলেন না কেউই। এমনকী বসার জন্য একটি চেয়ারও পাননি তিনি। বাধ্য হয়ে নিরাপত্তারক্ষীদের চেয়ারে বসেই চা পান করেন রাজ্যপাল।
উপাচার্য, সহ-উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রার প্রত্যেকের খোঁজ করলেও কাউকে পাওয়া যায়নি। দেখা যায় উপাচার্যের ঘরের দরজায় তালা ঝুলছে।
ঘুরে দেখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিও। বইপত্র নাড়াচাড়া করে দেখেন জগদীপ ধনকড়। তবে কেন লাইব্রেরিয়ান নেই সেই প্রশ্নও করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে কাউকে দেখতে না পেয়ে অত্যন্ত বিরক্ত হন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সাংবাদিকদের সামনে ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি। রাজ্যপাল বলেন, “উপাচার্যকে আমার আসার কথা জানিয়েছিলাম। তা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও আধিকারিক নেই। উপাচার্যকে বলব বিশ্ববিদ্যালয়কে রাজনীতির জায়গায় পরিণত করবেন না। আমার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার রয়েছে। তবে ক্ষমতার অপব্যবহার করিনি কখনও। এখনও করব না। আমি ভাবতেই পারছি না এমন ঘটনাও ঘটতে পারে। এই ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, বেদনাদায়ক।”
[আরও পড়ুন: ‘আমি সরকারের রাবার স্ট্যাম্প নই’, বিস্ফোরক রাজ্যপাল]
রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত নতুন কোনও বিষয় নয়। অশান্তি লেগেই রয়েছে দু’পক্ষের। দায়িত্ব নেওয়ার পরই রাজ্যপালের জেলা সফর ঘিরে সংঘাতের সূত্রপাত। তারপর একে একে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুলকে উদ্ধার, আচমকা সিঙ্গুর সফর, হেলিকপ্টার বিতর্ক, সংবিধান দিবসের অনুষ্ঠান-সহ নানা ইস্যুতে দু’পক্ষের সম্পর্ক ক্রমশ তিক্ত হয়েছে। সেই সংঘাতের তালিকা বুধবার আরও লম্বা হল। নতুন করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনায় রাজ্য-রাজ্যপাল সম্পর্ক আরও তলানিতে ঠেকল।
রাজ্যপালকে এদিন পালটা আক্রমণ করে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সাংবিধানিক পদকে লঙ্ঘন করে রাজ্যপাল অকারণে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন বলেও তোপ দাগেন তিনি।বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের অভিযোগ, রাজ্যে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হয়েছে।
দেখুন ভিডিও:
The post ফাঁকা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপাল, অভ্যর্থনা তো দূর মিলল না বসার চেয়ারও appeared first on Sangbad Pratidin.