মলয় কুণ্ডু: অবৈধ খাদান বন্ধে আগেই জেলাশাসকদের কড়া ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিল নবান্ন। পাশাপাশি ওভারলোডিং রোখার ক্ষেত্রেও জেলার প্রশাসনিক কর্তা ও পুলিশ সুপারদের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তার পরও বিভিন্ন জেলা থেকে নবান্নের কাছে অভিযোগ আসে বলে জানা গিয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিটি জেলায় টাস্ক ফোর্স তৈরি করে প্রয়োজনে পুলিশ সুপারদের সঙ্গে নিয়ে অবৈধ খাদান ও ওভারলোডিং বন্ধ করতে কড়া নির্দেশ জারি করল নবান্ন।
কোথায় কত ওভারলোডিংয়ের অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, সেই সংক্রান্ত তথ্য প্রতিদিন পরিবহন দপ্তরকে জানানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে খবর। মঙ্গলবার নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যসচিব এইচ কে দ্বিবেদী জেলাশাসকদের এ বিষয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন। আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) অবৈধ খাদান বন্ধে এবং দুর্নীতি রুখতে রাজ্যে স্যান্ড মাইনিং পলিসি তৈরি করেন। তিনি জানিয়েছিলেন, অবৈধ খাদানের সঙ্গে যুক্ত থাকলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিলাম প্রক্রিয়া হবে অনলাইনে। রাজ্যে খাদান লিজ দেওয়ার দায়িত্ব আর জেলাশাসকের হাতে থাকবে না। নিলামের যাবতীয় ব্যবস্থা করবে মিনারেলস মাইনিং করপোরেশন। সমস্ত বিষয়ে নজর রাখবেন মুখ্য সচিব এবং অর্থ সচিব। সেই ব্যবস্থা চালু হলেও এ নিয়ে অভিযোগ পাওয়ায় জেলাসাসকদের আরও কড়া হাতে খাদান দুর্নীতি রোখার নির্দেশ দেন মুখ্যসচিব।
[আরও পড়ুন: বিধায়করা দল ছাড়ায় বিজেপিতে ফের প্রকট আদি-নব্য বিবাদ! দলত্যাগীদের নোটিস শুভেন্দুর]
অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের অন্যতম চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে গাড়িতে ওভারলোডিংয়ের সমস্যা। কারণ ওভারলোডিংয়ের ফলে রাস্তার ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষার পর ওভারলোডিংয়ের জেরে রাস্তায় খানাখন্দ বাড়ছে। সেই পরিস্থিত সামাল দিতে জেলার পুলিশ সুপাররা এবার থেকে যাবতীয় তথ্য পাঠাবেন রাজ্যের পরিবহন দফতরে। যাতে এ বিষয়ে কড়া নজরদারি রাখা সম্ভব হয়। এ বিষয়ে আগেই কড়া মনোভাব নিয়েছে নবান্ন। তারপর গত দু’মাসে পুলিশি সক্রিয়তা বাড়ে। আগস্ট মাসে প্রায় পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি গাড়ি পরীক্ষা করা হয়। যার জেরে আড়াই হাজারেরও বেশি গাড়িতে ওভারলোডিং হওয়ার অভিযোগে জরিমানা করা হয় বলে তথ্য এসেছে নবান্নের কাছে।
কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জেরে মাত্র এক মাসেই প্রায় ৩০ শতাংশ গাড়িতে ওভারলোডিংয়ের প্রবণতা কমেছে বলে মনে করছে পুলিশ। রাজ্য সরকার আগেই জানিয়েছে, আগস্ট মাস থেকেই ওভারলোডিং হলেই প্রথমবার দিতে হবে ২০ হাজার টাকা। অতিরিক্ত প্রতি টন পণ্যে দু’হাজার চাকা করে দিতে হবে। দ্বিতীয়বার একই অভিযোগে ধরা পড়লে জরিমানা হবে ৪০ হাজার টাকা। অতিরিক্ত প্রতি টন পণ্যে চার হাজার চাকা করে দিতে হবে। বারবার একই অপরাধ করলে আর্থিক জরিমানার পাশাপাশি গাড়ির পারমিট ও রেজিস্ট্রেশনও বাতিল হতে পারে।