স্টাফ রিপোর্টার: পুজোর ছুটিতে উন্নয়নের কাজ যেন থমকে না থাকে। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় প্রকল্প যাতে সময়ে শেষ করা হয়, তা নিয়ে দপ্তরগুলিকে সতর্ক করতে ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক বৈঠক ডাকা হয়েছে। তার আগেই পঞ্চায়েত এলাকায় দুর্নীতি ঠেকাতে বড়সড় প্রশাসনিক সংস্কারের পথে হাঁটল নবান্ন। পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরেই নজরদারির কাজে সরাসরি যুক্ত করা হল অফিসারদের।
নবান্ন সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত আইনের আওতায় ২০০৪ সালের একটি পুরনো বিজ্ঞপ্তি বলবৎ করার নির্দেশ দিয়ে শুক্রবার নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। যাতে উল্লেখ, জেলা পরিষদে মাসে একবার গিয়ে কাজের অডিট করবেন প্রত্যেক ডিভিশনাল কমিশনার। জেলা শাসকদের প্রতি মাসে একটি করে পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতে পরিদর্শন করতে হবে। প্রত্যেক বিডিওকে মাসে তিনটে করে গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে কাজের হিসাব নিতে হবে। ভুয়ো কাজ বা ভুয়ো খরচ বন্ধ করতেই এই পদক্ষেপ।
উল্লেখ্য, গ্রামোন্নয়ন ও পঞ্চায়েত দপ্তরের একাধিক প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে। একশো দিনের প্রকল্পে দুর্নীতির প্রমাণ পেলে এফআইআর করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এবার দুর্নীতি বন্ধে পুরনো নিয়ম ফিরিয়ে এনে নতুন নির্দেশিকা জারি করা হল। এই পরিস্থিতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে বুধবারের প্রশাসনিক বৈঠক। নবান্ন সূত্রের খবর, সামনে পঞ্চায়েত ভোট। গ্রামীণ বাংলায় জুড়ে থাকা প্রকল্পগুলি দ্রুত শেষ করতে হবে। সব মানুষের কাছে নাগরিক সুবিধা ও পরিষেবা সময়ে পৌঁছে দিতে হবে। সেক্ষেত্রে ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে গেলেন রবীন্দ্র জাদেজা, পরিবর্তের নাম ঘোষণা করল BCCI]
ডাইরেক্ট ক্যাশ ট্রান্সফারের জন্য তৈরি জয় বাংলা পোর্টাল বাতিল করে গোটা রাজ্যে অভিন্ন একটি ক্যাশ ট্রান্সফার পোর্টাল বানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে একজন আইপিএস অফিসারের নেতৃত্বে চার জনের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের স্টিয়ারিং কমিটিও গড়ে দেওয়া হয়েছে। খোলা হচ্ছে পাবলিক গ্রিভান্স পোর্টাল। ৭ সেপ্টেম্বর নবান্ন সভাঘরে প্রশাসনিক বৈঠকে বসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী ও মুখ্যসচিবের কাছে প্রত্যেক দপ্তর থেকে রিপোর্ট জমা পড়েছে। সেগুলি স্ক্রুটিনির কাজ শুরু হয়েছে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই নবান্ন সভাঘরে মন্ত্রী, রাষ্ট্রমন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক করবেন তিনি।
কোন প্রকল্পের কাজ কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে, কোন গতিতে এগোচ্ছে, সময়ে শেষ করা যাবে কি না, তা খতিয়ে দেখার পালা চলছে। তালিকা তৈরি হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই মর্মে নির্দেশিকা জারি হয়েছে। নির্দেশে বলা হয়েছে, প্রশাসনিক সভায় শারীরিকভাবে উপস্থিত থাকবেন সব মন্ত্রী ও দপ্তরের সচিবরা। উপস্থিত থাকবেন রাজ্য পুলিশের ডিজি ও কলকাতার পুলিশ কমিশনারও। এছাড়া সব জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপারকে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকতে হবে। নবান্ন সূত্রের খবর, প্রতিটি দপ্তরের কাজকর্ম খতিয়ে দেখে সরাসরি তার মূল্যায়ন করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
ইউনেসকোকে ধন্যবাদ দেওয়ার ঐতিহাসিক মিছিল দিয়েই কলকাতায় শুরু হয়েছে দুর্গাপুজোর সেলিব্রেশন। ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা পুজো। প্রতিবার এই দিন থেকেই বাঙালির পুজো শুরু হয়ে যায়। এবার পুজোর আয়োজন আরও বেশি। পুজোর ছুটি ইতিমধ্যেই ঘোষণা করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সেই ছুটির ফাঁক গলে যাতে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ থমকে না যায়, তা নিয়ে বিশেষভাবে সতর্ক নবান্ন। লক্ষ্য একটাই, সময়ে প্রকল্প শেষ করা। কোনওভাবেই যাতে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ দিল্লিতে ফেরত না যায়। সময়ে যাতে ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা পড়ে দিল্লিতে।