গৌতম ব্রহ্ম ও ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: দেশের ‘ওমিক্রন’ (Omicron) সংক্রমণ ৬০০ ছুঁইছুঁই। ফের ডালপালা মেলছে কোভিড আতঙ্ক। এমন পরিস্থিতিতে ঝুঁকি কমাতে ১৫-১৮ বছর বয়সি ৪৫ লক্ষ ছেলেমেয়েকে টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করল রাজ্যের স্বাস্থ্যদপ্তর। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী ৩ জানুয়ারি থেকে এই কর্মসূচি শুরু হবে। বুস্টার ডোজ নিয়েও প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে রাজ্য। মঙ্গলবার রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম, স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. অজয় চক্রবর্তী ও টিকাকারণ সংক্রান্ত নোডাল অফিসার ডা. অসীম দাস মালাকার কেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেখানেই চূড়ান্ত হবে এই দুই কর্মসূচির রূপরেখা।
রাজ্যের কোভিড (Covid-19) পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। রবিবার নতুন করে ৫৪৪ জন সার্স-কোভ-২ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ঠিকই, কিন্তু মৃত্যু হয়েছে মাত্র ৫ জনের। চিন্তার বিষয় অন্যত্র। কলকাতা ফের সংক্রমণ শীর্ষে আরোহণ করেছে। ৫৪৪-এর মধ্যে ২১৯ জনই কলকাতার। বড়দিন ও বর্ষশেষের উৎসবে শহরের মানুষ কিছুটা লাগামছাড়া হওয়াতেই এই পরিস্থিতি বলে মনে করা হচ্ছে। রাজ্যের তরফে অবশ্য সতর্কতার কোনও খামতি নেই। উৎসবের জমায়েত যাতে বল্গাহীন না হয়, তার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ঘোষিত চার পুরনিগমের নির্বাচনের দিনক্ষণ, ঝুলেই রইল হাওড়ার ভাগ্য]
বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ওমিক্রণ সংক্রমণ ৩৭ শতাংশ বেড়েছে অনেকটাই। এই হারে বাড়তে থাকলে ফেব্রুয়ারিতে করোনা পরিস্থিতি আবার উদ্বেগজনক হয়ে উঠবে। এই আশঙ্কাতেই জানুয়ারির প্রথম থেকেই ১৫-১৮ বছর বয়সিদের টিকাকরণ (Vaccination) ও বুস্টার ডোজ দিতে চাইছে রাজ্য। এমনটাই জানিয়েছেন ডা. অসীম দাস মালাকার। সোমবার ‘সংবাদ প্রতিদিন’-কে তিনি এই খবর জানিয়ে বলেন, “এই দুই কর্মসূচি নেওয়ার জন্য রাজ্যের ভাঁড়ারে যথেষ্ট পরিমাণ ভ্যাকসিন মজুত রয়েছে। ১৫-১৮ বছর বয়সিদের কোভ্যাকসিন দেওয়া হবে।”
‘ওমিক্রন’ আতঙ্কে কাঁটা হয়ে আছে দেশ। ডেল্টার থেকে ৩ গুণ বেশি সংক্রমণ ক্ষমতা ধরে করোনার এই অবতার। এখনও পর্যন্ত ১০৯টি দেশে ছডিয়েছে এই স্ট্রেন। ছোবল দিয়েছে প্রায় ২ লক্ষ মানুষকে। ‘ওমিক্রনে’র ভয়ে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা, অসম-সহ একাধিক রাজ্যে পুনরায় নৈশ কারফিউ জারি হয়েছে। বিধিনিষেধের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ চাইছে টিকাকরণেও জোর দিতে।
জানা গিয়েছে, স্বাস্থ্যকর্মী বা ঝুঁকিবহুল পেশায় রয়েছেন এমন মানুষদের বুস্টার ডোজ দেওয়ার ব্যাপারে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। কো-মরবিডিটি রয়েছে এমন সিনিয়র সিটিজেনরাও বুস্টার ডোজ পাবেন। তবে সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর তাঁদের ৯ মাস অতিক্রম করতে হবে। যেহেতু এখন স্কুল খুলে গিয়েছে তাই স্কুলেও দেওয়া হবে ১৫-১৮ বছর বয়সিদের ভ্যাকসিন। সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও বহাল থাকছে টিকাকরণের ব্যবস্থা। তবে বেসরকারি ক্ষেত্রে এই বয়সিদের টিকাকদানের ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি।