অভিরূপ দাস: কোভিড আবহের মধ্যে থমকে গেলেও ফের তা ফিরেছে শহরে। অঙ্গদান। এবার আদিবাসী এক মহিলার অঙ্গে প্রাণ ফিরে পেল তিন মৃত্যু পথযাত্রী।
নভেম্বরের শেষে পথ দুর্ঘটনায় মস্তিষ্কে গুরুতর চোট পেয়েছিলেন মেদিনীপুরের বাসিন্দা বছর চল্লিশের আহ্লাদী মুর্মু। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে আসা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। চিকিৎসক চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু ক্রমশ কমছিল তাঁর চেতনা। অবশেষে গত শনিবার রাতে ব্রেন ডেথ হয় আহ্লাদীর। পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে ওইদিনই তাঁর ব্রেন ডেথ ঘোষণা করা হয়। আদিবাসী পরিবারে অঙ্গদানের ঘটনা বিরলতম। তবে ইচ্ছা থাকলে কী না হয়।
[আরও পড়ুন: নেশা ছাড়ানোর চেষ্টার চরম পরিণতি, জামাইবাবুকে ছুরি মেরে আত্মঘাতী বেনিয়াপুকুরের যুবক]
বাড়ির একজন যাতে আর পাঁচটা মানুষের মধ্যে বেঁচে থাকে সে কারণে স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে মরণোত্তর অঙ্গদানের (organ transplant) ইচ্ছাপ্রকাশ করে মেদিনীপুরের এই আদিবাসী পরিবার। তাঁদের ইচ্ছা মেনেই রবিবার সকালে এসএসকেএম হাসপাতালে আহ্লাদী মুর্মুর যকৃত গ্রহণের কাজ শুরু হয়। পরিবারের অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরই যোগাযোগ করা হয় রোটোর নোডাল অফিসার, বিশেষ সচিবের সঙ্গে। রবিবার দুপুরে লিভার পৌঁছে যায় মেডিকা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে। সেখানে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত এক ব্যক্তির শরীরে তা প্রতিস্থাপিত হয়েছে। লিভার প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচার জটিলতম। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন সফলভাবেই লিভারটি বসানো গিয়েছে। আহ্লাদীর ছেলে জানিয়েছেন, মায়ের অঙ্গগুলো পেয়ে ক’টা মানুষ যদি বাঁচে, তাহলে মা ওদের মধ্যেই বেঁচে থাকবে।
এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আহ্লাদীর ত্বকও সংগ্রহ করা হবে প্রতিস্থাপনের জন্য। অন্যদিকে, আদিবাসী ওই মহিলার একটি কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়েছে এসএসকেএমে এক রোগীর শরীরে। অন্য আর একটি কিডনি গ্রিন করিডর করে রবিবার সকাল ৮টায় পৌঁছে যায় আরএনটেগোর হাসপাতালে। কলকাতা পুলিশের সহায়তায় রবিবার সকালে গ্রিন করিডর করে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে মাত্র ১৫ মিনিটে অঙ্গ নিয়ে আসা হয় আরএনটেগোরে। সেখানে এক ব্যক্তির শরীরে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। অস্ত্রোপচার সফল বলেই জানিয়েছেন আরএনটেগোর কর্তৃপক্ষ। আপাতত গ্রহীতাদের কড়া পপর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। আহ্লাদী মুর্মুর আরও একটি কিডনি এসএসকেএমেই এক ব্যক্তির শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।