shono
Advertisement
Mohammed Shahabuddin

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের ভবিষ্যৎ কী? কী জানাল ইউনুস সরকার

রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনের সামনে প্রতিবাদ আন্দোলনকারীদের। জোরদার করা হয়েছে গোটা এলাকার নিরাপত্তা।
Published By: Suchinta Pal ChowdhuryPosted: 06:27 PM Oct 23, 2024Updated: 06:28 PM Oct 23, 2024

সুকুমার সরকার, ঢাকা: রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ বাংলাদেশে। তাঁর ইস্তফার দাবিতে সরব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের জেরে আহতও হয়েছেন ৫ জন। ফলে প্রশ্ন উঠছে, সাহাবুদ্দিনের ভবিষ্যৎ নিয়ে। শেখ হাসিনার মতোই জনরোষের মুখে গদি হারাবেন তিনি? এই পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মহম্মদ ইউনুসের প্রেস সচিব জানালেন, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।    

Advertisement

সোমবার থেকেই রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের দাবি জোরাল হয়েছে। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তে মশালমিছিল, মানববন্ধন করেন আন্দোলনকারীরা। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতির সরকারি বাসভবন বঙ্গভবনে ঢুকতে চাইলে তাঁদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে পুলিশের। এই মুহূর্তে আরও কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে বঙ্গভবন। মূল গেটের সামনে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও সেনা। সাহাবুদ্দিন 'হাসিনা ঘনিষ্ঠ' হিসাবেই পরিচিত রাজনৈতিক মহলে। বিশ্লেষকদের মতে, এই কারণেই হয়তো তিনি এখন নিশানায়। তাঁর ইস্তফা প্রসঙ্গে ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা জানান, "রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ না করলে তাকে সরিয়ে দেওয়া হবে। কেননা তিনি শেখ হাসিনার নিয়োগকৃত রাষ্ট্রপতি। হাসিনা সরকারের বন্ধু ছিলেন তিনি। ওঁকে এখনই পদত্যাগ করতে হবে।” সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ নিয়ে নানা আলোচনা চলছে অন্তর্বর্তী সরকারের অন্দরে। আজ বুধবারও এনিয়ে বৈঠক হয় প্রধান উপদেষ্টা ইউনুসের বাসভবন যমুনায়। আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখী হয়ে ইউসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, "আমরা এখনও রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।" 

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। গদি হারিয়ে এখন তিনি ভারতের আশ্রয়ে রয়েছেন। প্রায় আড়াই মাস পেরিয়ে গিয়েছে বাংলাদেশের এই রাজনৈতিক পালাবদলের। কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, সম্প্রতি ভিডিও বার্তা দিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের হাসিনা জানান, তিনি পদত্যাগ করেননি। যেকোনও সময় বাংলাদেশে ঢুকে পড়বেন। এর কয়েকদিন পরেই মুজিবকন্যার পদত্যাগ নিয়ে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ঢাকার এক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমি বহুবার পদত্যাগপত্র সংগ্রহের চেষ্টা করেছি, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি। ৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে বঙ্গভবনে ফোন আসে, প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আসবেন। কিন্তু এক ঘণ্টার মধ্যে আর একটি ফোনে জানানো হয় যে, শেখ হাসিনা আসছেন না। এ বিষয়ে আর বিতর্কের সুযোগ নেই। তিনি দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন এবং এটাই সত্য। কিন্তু ভবিষ্যতে এ বিষয়ে যাতে আর কোনও প্রশ্ন না ওঠে, তা নিশ্চিত করতে সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে আদালতের মতামতের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়।”

রাষ্ট্রপতির এহেন মন্তব্যের পরই ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। প্রবল ক্ষুব্ধ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। রাষ্ট্রপতিকে তোপ দাগেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। সাহাবুদ্দিনের বক্তব্যকে মিথ্যাচার বলে দাবি করে তিনি বলেন, “তাঁর এই পদে থাকার যোগ্যতা আছে কি না, এ নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে। তিনি যদি তাঁর বক্তব্যে অটল থাকেন, তাহলে বিষয়টি উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হতে পারে। রাষ্ট্রপতি নিজেই ৫ আগস্ট রাত ১১টা ২০ মিনিটে তিন বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছিলেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তাঁর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং উনি তা গ্রহণ করেছেন।”

সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিত বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেন ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। তবে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগই কেবল নয়, মোট পাঁচ দফা দাবি রয়েছে আন্দোলনকারীদের। যার মধ্যে রয়েছে সংবিধান বাতিল কিংবা আওয়ামি লিগের ছাত্র সংগঠনকে জঙ্গি তকমা দিয়ে নিষিদ্ধ করার মতো দাবি। সেই সঙ্গে আরও দাবি, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে যে নির্বাচন হয়েছিল তা বেআইনি বলে ঘোষণা করতে হবে এবং যে প্রতিনিধিরা এই নির্বাচনে জিতে সংসদের সদস্য হয়েছেন তাঁদের সদস্যপদও বাতিল বলে ঘোষণা করতে হবে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই নতুন করে উত্তপ্ত ঢাকা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ বাংলাদেশে। তাঁর ইস্তফার দাবিতে সরব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা
  • পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের জেরে আহতও হয়েছেন ৫ জন। ফলে প্রশ্ন উঠছে, সাহাবুদ্দিনের ভবিষ্যৎ নিয়ে।
  • এই পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মহম্মদ ইউনুসের প্রেস সচিব জানালেন, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।   
Advertisement