আকাশ মিশ্র: অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা জিয়নকাঠিই বটে। তিনি সেই জিয়নকাঠি যাঁর স্পর্শ বাঁচার মন্ত্র শেখায়। জীবন আমাদের অনেক কিছু শিখিয়ে দেয়। আবার এমন অনেক মানুষ রয়েছেন, যাঁর থেকে বাঁচতে শেখা যায়। ঐন্দ্রিলা ঠিক সেরকমই একজন মানুষ। মারণ রোগ ক্যানসারকে দু’ বার হারিয়েছেন ঐন্দ্রিলা। ক্যানসারের কাছে মেরুদণ্ড ঝুঁকিয়ে দেননি। উলটে, বুক চিতিয়ে লড়ে গিয়েছেন। জিতেওছেন। চলতি মাসের শুরুতে ব্রেন স্ট্রোক হওয়ায় হাসপাতালে যখন ভরতি হলেন, তখন লড়াই ফের শুরু। এখনও তিনি লড়ছেন। প্রায় ১৫ দিন ধরে হাসপাতালের বিছানায় লড়ছেন তিনি। এত শক্তি কোথা থেকে পেল মেয়েটা। মাত্র ২৪ বছর তো বয়স! এত লড়াই শিখল কোথা থেকে! তাঁর লড়াই কোটি কোটি মানুষের কাছে প্রেরণা।
সময়টা ২০২১ সালের মার্চ মাস। দ্বিতীয়বার ক্যানসারকে হারিয়ে সবে কাজে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ঐন্দ্রিলা। সুযোগ পেয়ে ঐন্দ্রিলাকে ফোন করা। মুখে হাসি নিয়েই ফোন ধরছিলেন ঐন্দ্রিলা। কেমন আছেন আপনি? প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে, একটুও সময় নেননি ঐন্দ্রিলা (Aindrila Sharma)। তিনি জানিয়েছিলেন, ”আগের থেকে ভাল আছি।” ঐন্দ্রিলা ঠিক এরকমই। ভীষণ পজিটিভ। ভাল থাকার কথা বলেন। ভাল থাকেনও। আর তাঁর এই ইতিবাচক জীবন অন্যকেও ভাল থাকতে সাহায্য করে।
[আরও পড়ুন: ঐন্দ্রিলা শর্মার মৃত্যুর গুজবে তোলপাড় নেটপাড়া, কেমন আছেন অভিনেত্রী? ]
ক্যামেরা তাঁর সব সময়েই প্রিয়। তাই তো শুটিং ফ্লোরে ফেরাটাই সেই সময় সবচেয়ে বড় খুশির কারণ ছিল তাঁর কাছে। ঐন্দ্রিলা জানিয়েছিলেন, ”শুটিং ফ্লোরে ফিরে সত্য়িই খুব ভাল লাগছে। এটাই তো আমার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা। এটা করতেই আমি সবচেয়ে বেশি ভালবাসি। এটাই আমার কাজ। শুটিং ফ্লোর থেকে আলাদা হয়ে খুব খারাপ ছিলাম। আসলে কেমো নেওয়ার পর যে আবার কাজ করতে পারব, সেটা ভাবিনি। সেটা করতে পারছি। এটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় পাওয়া।”
মনের জোরে সবাইকে টেক্কা দিতে পারেন ঐন্দ্রিলা। তাই তো প্রিয়জনরা তাঁকে ‘লড়াকু মেয়ে’ বলে ডাকেন। সত্য়িই তো লড়াকু মেয়ে সে। নাহলে এভাবে লড়াই চালিয়ে যেতে পারেন কেউ!
ঐন্দ্রিলা জানিয়েছিলেন, ”আমাকে তো লড়তেই হবে, তা আমি হাসতে হাসতে লড়তে পারি, কাঁদতে কাঁদতে লড়তে পারি। কোনটা বেছে নেব, সে সিদ্ধান্তটা তো আমার উপর। আমি কিন্তু হাসিমুখটাই বেছে নিয়েছি। এটাই যদি আমার মনের জোর হয়, তাহলে সেটাই। তবে হ্যাঁ, আমি চাই না, আমার পরিস্থিতিতে কেউ এরকমভাবে মনের জোর প্রমাণ করুক। আমি শুধু জানি আমাকে লড়তে হবে। আমি লড়ছি।”
লড়তে তাঁকে হবেই। নিজেকে এভাবেই তৈরি করেছিলেন ঐন্দ্রিলা। সেকথা জানতেন তাঁর প্রিয়মানুষ সব্যসাচীও। তাই তো ঐন্দ্রিলার এই লড়াইয়ে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তিনি। সেসময় ছিলেন, এখনও রয়েছেন। থাকবেনও।
আজ যখন হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে ঐন্দ্রিলা লড়ছেন, তখনও পাশে সব্যসাচী। গুজব রটলে সোশ্য়াল মিডিয়ায় কড়া জবাব দিচ্ছেন, প্রতিটি সেকেন্ড ঐন্দ্রিলার পাশে থাকার কথাও বলছেন। এমন এক সঙ্গীকে পেয়ে কঠিন লড়াইটা হয়তো একটু হলেও সহজ হয়েছে ঐন্দ্রিলার। সঙ্গীর এই ভরসার হাতটাই ঐন্দ্রিলার সবচেয়ে বড় অস্ত্র। লড়াকু ঐন্দ্রিলা লড়ে যাক। সবাইকে তাক লাগিয়ে কামব্যাক করুক। প্রার্থনা রইল।