ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: টানা একমাসের কাছাকাছি বিধানসভার অধিবেশন চলছে। তার মধ্যেও নজর একতলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) পাশের দু’টি ঘরে। একটি প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের (Subrata Mukherjee)। অন্যটি প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রর। এই দু’টি ঘরই আপাতত খালি। ঘর দু’টি স্বাভাবিকভাবেই কারও না কারও জন্য বরাদ্দ হবে। কিন্তু কার জন্য? সেটাই এখন প্রশ্ন।
বিধানসভা সূত্রে জানা যাচ্ছে, দু’টি ঘরের জন্য চারজন মন্ত্রীর আবেদন জমা পড়েছে। কিন্তু কার ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে, তা নির্ভর করছে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর। মুখ্যমন্ত্রীর ঘরের পাশেই শিল্পমন্ত্রী তথা পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘর। তার পাশে অমিতবাবু ও সুব্রতবাবুর ছেড়ে যাওয়া ঘর। ফলে ধারে ও ভারে পরপর ঘরগুলির যথেষ্ট গুরুত্ব। সচিবালয়ের মতো বিধানসভাতেও প্রত্যেক মন্ত্রীর আলাদা ঘর। একতলার ঘরগুলি সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের। মুখ্য সচেতক ও উপ মুখ্য সচেতকের ঘরও সেখানেই। দোতলায় বরাদ্দ রয়েছে বাকি মন্ত্রীদের ঘর।
[আরও পড়ুন: বগটুই কাণ্ডের রেশ বিধানসভায়, তৃণমূল-বিজেপির হাতাহাতিতে নাক ফাটল বিধায়কের, ভাঙল চশমাও]
মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের একতলার ঘর বরাদ্দ হয়েছে মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের জন্য। ইন্দ্রনীল এতদিন উপরে বসতেন। প্রতিটি ঘর আয়তনে বেশ বড়সড়। সামনে লম্বা বারান্দা, গাড়ি বারান্দা, পোর্টিকো, উঁচু ছাদ, খড়খড়ি দেওয়া দরজা-জানলার সঙ্গে ঘরের ঠিক পিছনেই বাগানের দিকে রয়েছে আরেকটি লম্বা বারান্দা। ২৯৪ জন বিধায়ক, তাঁদের ব্যক্তিগত সচিব ও রক্ষী, বিধানসভার কর্মীদের নিয়ে যখন অধিবেশন চলে তখন একেবারে গমগম করে গোটা বাড়ি। কিন্তু এই ব্যস্ততার সবটাই একতলায় যতটা চোখে পড়ে দোতলায় উঠলে তার সিকিভাগও না। ফলে দোতলার ফাঁকা করিডর বা নিজেদের ঘরে সেভাবে মন্ত্রীদের আনাগোনা নজরেও পড়ে না। সেই কারণেই তাঁদের ঘর বদলের আগ্রহ আবেদনের পর্বে এসে ঠেকেছে।
এই দু’টি ঘর প্রাথমিকভাবেই যে দু’জনের জন্য বরাদ্দ হওয়ার কথা মাথায় আসে তাঁরা হলেন বর্তমান অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য আর বর্তমান পঞ্চায়েতমন্ত্রী পুলক রায়। বিধানসভায় চন্দ্রিমার ঘর এখন দোতলায়। তাঁর হাতে রয়েছে অর্থ, স্বাস্থ্য, ভূমি-সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। তবে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, যে ঘরে তিনি আছেন সেখানেই ভাল আছেন। নিচের ঘরে যাওয়ার কোনও ইচ্ছাই তাঁর নেই। অন্যদিকে, সুব্রতবাবুর ঘর পুলক রায় পাবেন কিনা, সে সিদ্ধান্ত ঘর বণ্টনের সময়ই নেবেন অধ্যক্ষ। বাজেট অধিবেশন শেষ হচ্ছে আগামী সোমবার। পরের অধিবেশন বসতে পারে জুন-জুলাইয়ে। তার আগেই ঘর বণ্টন নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়ে যেতে পারে।