কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: স্বামীর সচেতনতার অভাবে পরিবারের মধ্যে ছড়িয়েছে করোনা (Coronavirus)। এই অভিযোগ তুলে কোভিড পরীক্ষাকেন্দ্রের মধ্যেই স্বামীর সঙ্গে বিবাদে জড়ালেন স্ত্রী। সেখানে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর্মীদের হস্তক্ষেপে কোনওভাবে বিবাদ মেটে। এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটল বৃহস্পতিবার, দক্ষিণ দমদমের (South Dumdum) রবীন্দ্রভবনে। এহেন দাম্পত্য বিবাদের নজির দেখে হতবাক পরীক্ষাকেন্দ্রের কর্মীরা।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে রবীন্দ্রভবন সেন্টারে করোনা পরীক্ষা করাতে আসেন বিবেকানন্দ পল্লির এক পরিবারের তিন সদস্য। স্বামী, স্ত্রী ও সন্তান। সেখানে উপস্থিত পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন, পুজোর মধ্যেই অল্পবিস্তর জ্বরে ভুগছিলেন ওই গৃহকর্তা। তবে আর পাঁচজনের মতো বিষয়টিতে গুরুত্ব দেননি তিনি। তারপর তাঁর স্ত্রী ও সন্তানেরও জ্বর আসে। এদিন রবীন্দ্রভবনে ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা (Rapid Antigen Test) করার পর পরিবারের তিন সদস্যেরই করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
[আরও পড়ুন: কলকাতায় ‘লেডিস গ্যাংয়ের’ দাপট, প্রকাশ্যে যুবকের নগদ-মোবাইল ছিনতাই যৌন কর্মীদের]
তা জানার পর নিয়ে কার্যত স্বামীর বিরুদ্ধে যুদ্ধং দেহি মনোভাব নেন স্ত্রী। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পরীক্ষাকেন্দ্রে বাকবিতন্ডাও বেঁধে যায়। স্বাস্থ্যকর্মীরা জানান, জ্বর হওয়ার পর স্বামী কেন সচেতন হননি, কেন আলাদা থাকেননি, প্রকাশ্যে সরাসরি এই প্রশ্ন তুলে দেন স্ত্রী। পরে দু’জনকে বুঝিয়ে শান্ত করা হয়। পুরসভার নির্দেশমতো ওই পরিবারের তিনজন সদস্য হোম কোয়ারান্টইনে থাকবেন।
করোনা পরিস্থিতি নিয়ে দুশ্চিন্তা বেড়েই চলেছে দক্ষিণ দমদম পুরসভার। বিশেষ করে পুরনাগরিকদের মধ্যে সচেতনতার অভাব যেন আরও প্রকট হয়ে দেখা দিচ্ছে বলে আফশোস করছেন পুর আধিকারিকরা। তাঁদের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে যে, একজন করোনা আক্রান্ত হলে সচেতনতার অভাবে তাঁর শরীর থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে পরিবারের বাকিদের মধ্যেও।
[আরও পড়ুন: পরকীয়ায় জড়িয়েছে স্ত্রী! স্রেফ সন্দেহে খাস কলকাতায় মহিলাকে গুলি করে খুনের চেষ্টা স্বামীর]
একইরকমভাবে আরও কয়েকটি সচেতনতার অভাবের ঘটনা সামনে এসেছে পুর আধিকারিকদের কাছে। জানা গিয়েছে, পূর্ব সিঁথির এক বাসিন্দার করোনা ধরা পড়ে। কিন্তু ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে বলে দীর্ঘ সময় ধরে বাজারে সময় কাটিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ওই ব্যক্তি। ফলে ওই ব্যক্তির থেকে আরও কয়েকজন সংক্রমিত হয়েছেন বলে অনুমান আধিকারিকদের। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের প্রশাসক প্রবীর পাল বলেন, ”সামান্য উপসর্গ দেখা দিলে বাড়িতে আলাদা থাকা প্রয়োজন। কিন্তু অনেকেই তা করছেন না বলে আমাদের কাছে খবর আসছে। ফলে এক ব্যক্তি থেকে পরিবারের অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন। আমরা আবেদন রেখেছি, কোনও উপসর্গ দেখা দিলে সচেতন হন। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান দ্রুত। তবেই সংক্রমণের হার রোধ করা সম্ভব।” এই অবস্থায় পুরসভা সচেতনতার প্রচারের উপর আরও জোর দিচ্ছে। পরিসংখ্যান বলছে, এলাকায় বর্তমানে ৫০০ জনের কাছাকাছি করোনায় আক্রান্ত রয়েছেন।