বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, হায়দারাবাদ: দ্বিতীয়বার সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েই চালিয়ে খেললেন সীতারাম ইয়েচুরি। রবিবার পার্টি কংগ্রেসের শেষদিনে মঞ্চে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘এটা ঐক্যের পার্টি কংগ্রেস। মানুষের লড়াইকে আরও শক্তিশালী করে এগোব। বিকল্প নীতির উপর দাঁড়িয়ে লড়াই হবে। এই আরএসএস বিজেপি সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। কংগ্রেসের সঙ্গে রাজনৈতিক জোট হবে না। সংসদের ভিতরে বাইরে সাম্প্রদায়িকতাকে রুখতে সমঝোতা হবে। মানুষের ইস্যু নিয়ে গণসংগঠন কাজ করবে। নির্বাচন যখন আসবে ওই সময় যে পরিস্থিতি হবে, যে প্রান্তে নির্বাচন হবে সেখানকার পরিস্থিতি বিচার করে আমাদের রাজনৈতিক লাইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ তাঁর বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট, বিজেপিই প্রধান শত্রু। আর তাকে রোখার জন্য সংসদীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসের সঙ্গে ইস্যুভিত্তিক সমঝোতা হবে। তবে জোট এখনই নয়। মানে, জোটের রাস্তা সাফ হলেও সাবধানে খেলতে চাইছেন সাধারণ সম্পাদক। যাকে বলে পিচ বুঝে ব্যাট করা। এবং তা অবশ্যই পার্টি লাইনের সঙ্গে গিয়ে।
[ফের কারাটকে মাত, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল ইয়েচুরিই]
রবিবার হারা ম্যাচ জিতলেনই। একইসঙ্গে প্রকাশ কারাটদের হাত থেকে ব্যাটন ছিনিয়ে নিজের হাতে তুলে নিলেন ক্যাপ্টেন সীতারাম ইয়েচুরি। গত
বুধবার যখন হায়দরাবাদে পার্টি কংগ্রেস শুরু হল তখন আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল সাধারণ সম্পাদক হিসাবে সীতার ইনিংস কী এখানেই শেষ। সদ্য রাজ্যপাট হারান মানিক সরকারকে সামনে রেখে ঘুঁটি সাজাচ্ছিল কারাট শিবির। বস্তুত মহাসম্মেলনের প্রেসিডিয়ামের নিয়ন্ত্রণ মানিকের হাতে তুলে দিয়ে নিরুচ্চারে সেই বার্তাও দেওয়া হয়েছিল। এহেন বিরুপ আবহাওয়ার মধ্যেই বঙ্গ ব্রিগেডকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে নামেন ইয়েচুরি। টানা চারদিন গোটা দেশবাসী দেখেছে অসামান্য এক রাজনৈতিক ‘থ্রিলার’। ঘটনা-প্রতিঘটনা, ঘাত-প্রতিঘাত, চাল-পালটা চালের টানটান চিত্রনাট্যের শেষে শেষ হাসিটা হাসলেন সীতারাম ইয়েচুরিই। পাঁচদিনের টানটান চিত্রনাট্যে কী ছিল না। পার্টি ভাঙার নিশব্দ হুমকি। প্রথা ভেঙে গোপন ব্যালটে ভোটের দাবি। সংখ্যাগরিষ্ঠতা হাতে নেই বুঝে ‘সংখ্যালঘু গণতন্ত্র’-এর মতো লুপ্ত হওয়া রাজনৈতিক প্র্যাকটিসকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাতা থেকে পার্টি কংগ্রেসের হাজির করে জয় সুনিশ্চিত করা। কংগ্রেসের সঙ্গে ভোট রাজনীতিতে জোটতত্বকে প্রতিষ্ঠা করা। কারাট ঘরণী বৃন্দার বিভ্রান্তি ছড়ানোর মোকাবিলায় তাঁর শিবিরেরই মহম্মদ সেলিমকে দিয়ে পালটা সাংবাদিক সম্মেলন করানো। একের পর অবিশ্বাস্য চালে প্রতিক্ষেত্রেই মাত করেছেন প্রতিপক্ষকে। মহাবলিয়ান কারাট শিবির কোনও প্রতিরোধের প্রাচীরই গড়ে তুলতে পারেনি সীতারামের নেতৃত্বে বঙ্গ ব্রিগেডের কাছে। শেষ দিনেও কমিটিতে একের পর এক নিজের লোক ঢুকিয়ে বাজিমাত করেছেন পার্টির সংখ্যালঘু সাধারণ সম্পাদক।
[জোড়া লড়াই শুরু ইয়েচুরির, বসে নেই কারাট-পক্ষও]
The post বিজেপিই প্রধান শত্রু, পার্টি কংগ্রেস থেকে লড়াইয়ের ডাক ইয়েচুরির appeared first on Sangbad Pratidin.