ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: সব জানা সত্ত্বেও কেন আগে উদ্যোগ নেওয়া হল না? ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয় পড়ুয়াদের উদ্ধারকাজ নিয়ে কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার উত্তরপ্রদেশের ভোটপ্রচারের জন্য বারাণসীর উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন মমতা। মোদির লোকসভা কেন্দ্রে সমাজবাদী পার্টির (Samajwadi Party) হয়ে প্রচারে ঝাঁপানোর আগে বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে মোদি তথা বিজেপির প্রচারসর্বস্বতা নিয়ে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অভিযোগ করেছেন, ”বিজেপির মন্ত্রীরা বড় বড় লেকচার দিচ্ছেন। কিন্তু দেশের প্রয়োজনে কাজের কাজ করছেন না।” মমতার সাফ কথা, ”দেশের প্রয়োজনে, কাউকে বাঁচানোর প্রয়োজনে আমাকে যদি যুদ্ধে যেতে হয়, তাহলে আমি যুদ্ধে যেতেও রাজি।”
ইউক্রেনে আটকে থাকা পড়ুয়াদের দুর্দশা নিয়ে এদিন কেন্দ্রকে একহাত নিয়েছেন মমতা (Mamata Banerjee)। তৃণমূলনেত্রীর প্রশ্ন, “প্রধানমন্ত্রী তিন মাস আগে থেকে সব জানতেন। তাহলে কেন ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেননি ছাত্রদের? তাহলে তাদের বাঙ্কারে থাকতে হত না, খাবারের জন্য কাঁদতে হত না, মৃত্যুও হত না।” মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, “আমি বিদেশনীতি নিয়ে বলতে চাই না। আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই। কিন্তু রাজনৈতিক ইচ্ছার অভাবে ভারতের পড়ুয়ারা সমস্যায় পড়েছে। সরকার যখন যুদ্ধ সম্পর্কে সব জানত, তাহলে কেন ভারতের পড়ুয়াদের ফেরানো হল না? এটা অবহেলা, আর অবহেলাটা অপরাধ।”
[আরও পড়ুন: রুশ গোলায় কিয়েভ যেন মৃতুপুরী, যুদ্ধের মাঝে শরণার্থীদের আগলে রাখছেন ভারতীয় রেস্তরাঁর মালিক]
ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয় পড়ুয়াদের দেশে ফেরাতে ‘অপারেশন গঙ্গা’ নামের কর্মসূচি নিয়েছে ভারত সরকার। ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী দেশগুলিতে পাঠানো হয়েছে তিন মন্ত্রীকে। কিন্তু সরকার উদ্যোগ নিতে বড্ড দেরি করে ফেলেছে বলেই মনে করছেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, “কেন্দ্রীয় সরকার আগেভাগে সবাইকে ফেরালে খাদ্য খুঁজতে গিয়ে একজনের জীবন চলে যেত না। এটা সরকারের দায়িত্ব। ওখানে গিয়ে আবার অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী ভাষণ দিচ্ছেন। লেকচার দিচ্ছেন কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে না।” মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বিজেপির (BJP) মন্ত্রীরা দেখনদারি করছে। মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বলেছেন, “মানুষের কাজ করার দরকার হলে আমি নিজে যুদ্ধে যেতে রাজি।”
[আরও পড়ুন: দেশ বাঁচাতে এবার রুশ ট্যাঙ্ক ‘চুরি’ করলেন ইউক্রেনের চাষি, ভিডিও ভাইরাল]
সংকটের সময়ে যেভাবে প্রধানমন্ত্রী উত্তরপ্রদেশের ভোটপ্রচার করছেন, সেটা নিয়েও এদিন কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলছেন, “রাজনীতির লড়াই তো হবেই? রাজনীতিক সভা করতে পারছেন দিনে তিন-চারটে করে। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে এই কাজটা করা উচিত ছিল।”