সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘ভোটের মরশুমে কলকাতার বাজারে ঘোরাফেরা করছে হাওয়ালার কোটি কোটি টাকা৷ ক্ষমতা থাকলে, একটা বেআইনি টাকাও কাজে লাগাতে দিতেন না৷’ মঙ্গলবার যাদবপুর কেন্দ্রের অন্তর্গত বিজয়গড়ের প্রচার সভা থেকে এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বেশ জোরালো কণ্ঠেই বললেন, ‘নির্বাচনের পর যদি বুঝতে পারি, প্রশাসনের কেউ এই টাকার খেলায় জড়িত, তাহলে কিন্তু কাউকে ছাড়ব না৷ আমি সব খবর রাখছি৷’
[আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় বাহিনীর কাজে ক্ষোভ, কমিশনের সিইও-কে চিঠি রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবের]
মঙ্গলবার কিছুটা বিকেলের দিকেই সভা শুরু করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এদিন একেবারে শহর ঘুরে প্রচার কর্মসূচি ছিল তাঁর৷ যাদবপুর কেন্দ্রের জন্য বিজয়গড় ও টালিগঞ্জে, কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রের জন্য বেহালায় জনসভা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো৷ বিজয়গড়ে যাদবপুরের তারকা প্রার্থী মিমি চক্রবর্তীর হয়ে প্রচার দিয়ে শুরু করেন এদিনের কর্মসূচি৷ শুরুতেই মিমির মতো নায়িকাকে প্রার্থী করার ব্যাখ্যা দিলেন৷ কোনও কোনও মহল থেকে প্রশ্ন উঠছিল মিমি, নুসরতকে দলের সুপ্রিমো প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়েছেন কেন? তারই জবাবে মমতা বলেন,‘অনেকে ভাবছেন, ওরা সিনেমা করে৷ ওরা রাজনীতি কী বুঝবে? এটা কিন্তু ঠিক কথা নয়৷ ওরা খুব কম সময়ের মধ্যে কাজটা বেশ ভাল বুঝেছে৷ নুসরতও কাজটা বুঝে গিয়েছে৷ এত কম সময়ের মধ্যে ওরা নিজেদের কাজ বুঝে যাওয়ায় আমি আনন্দিত৷’
[আরও পড়ুন: ‘বাংলায় এবার গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লড়াই’, তৃণমূলকে আক্রমণ শমীকের]
গত কয়েকদিন শহর এবং দু-একটি জেলায় লক্ষ, কোটি বেআইনি টাকার হদিশ মিলেছে৷ আসানসোলে কোটি টাকা-সহ ধরা পড়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক৷ সেসব প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এদিনের প্রচার সভায় তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, ‘কলকাতায় লক্ষ-কোটি টাকা উড়ছে৷ আমার ক্ষমতা থাকলে একটা টাকাও ব্যবহার করতে দিতাম না৷ কমিশনকে জানিয়েছি সব৷ জানতে চেয়েছি, ওরা কী ব্যবস্থা নিচ্ছে৷ নির্বাচন শেষ হয়ে গেলে তো কমিশন থাকবে না৷ তখন যদি জানতে পারি, প্রশাসনের কেউ টাকা নিয়েছেন, আমি কিন্তু ছেড়ে দেব না৷’
[আরও পড়ুন: লেনিন সরণি থেকে সরল ফ্লেক্স, অমিত শাহের রোড-শো শুরুর আগেই উত্তেজনা]
চিরাচরিত ভঙ্গিতে এই সভা থেকেও তিনি বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়েছেন৷ বাংলার সংস্কৃতি, টাকা দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা-সহ একাধিক অভিযোগে বিজেপি বিরোধিতার ডাক দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বলেন, ‘ওরা ফেসবুক না, ফেকবুক ব্যবহার করে৷’ মঙ্গলবার বিজয়গড়ের সভা শেষ করে তিনি কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রেরই অন্তর্গত টালিগঞ্জ ফাঁড়িতে চলে যান, প্রার্থী মালা রায়ের সমর্থনে প্রচার করতে৷ এত বেশি দফায় ভোট হওয়া নিয়ে আবারও প্রশাসনিক কাজ ব্যাহত হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন৷ ক্ষোভের সঙ্গে তাঁর গলায় একটু আক্ষেপের সুরও বেজে উঠল৷ এতদিন ধরে তিনি লাগাতার নির্বাচনী প্রচার করায় অনেকদিন বাড়ি ফিরতে পারেননি, এই আক্ষেপ ঝরে পড়ল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর গলায়৷
The post ‘টাকা নয়ছয় ধরতে পারলে রেয়াত নয় প্রশাসনের কর্তাদেরও’, হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর appeared first on Sangbad Pratidin.