রিংকি দাস ভট্টাচার্য: ভরা হেমন্তে জাঁকিয়ে বর্ষার আমেজ। প্রাক দীপাবলির ঝকঝকে আকাশকে গিলে ফেলে নিম্নচাপের কালো মেঘই যেন বুঝিয়ে দিল, প্রকৃতির খামখেয়ালিপনার সঙ্গে তাল মেলায় কার সাধ্যি!
কালীপুজোর দিন আবহাওয়া উন্নতির সম্ভাবনা থাকলেও গত দু’দিনের উলটপুরাণে মেজাজই বদলে দিয়েছে কলকাতা-সহ তামাম রাজ্যের। বৃষ্টিভেজা ভোর থেকে শরীরে শিরশিরানি ঠিক যেন শীতের দোরগোড়া। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে মহানগরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের এক ডিগ্রি নিচে নেমে ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে! শুক্রবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২১.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পার্শ্ববর্তী দমদমে ২০.৭ ডিগ্রি। রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলেও হু হু করে নেমেছে তাপমাত্রা।
[ আরও পড়ুন: খুনের আগে বৃদ্ধাকে নৃশংসভাবে ‘ধর্ষণ’, নেতাজিনগরকাণ্ডে মিস্ত্রির বিরুদ্ধে চার্জশিট ]
উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূল এবং দক্ষিণ ওড়িশা লাগোয়া এলাকায় নিম্নচাপটি অবস্থান করছে। নিম্নচাপের জেরে এ রাজ্যে প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢুকছে। সে কারণেই এই বৃষ্টিপাত বলে জানাচ্ছেন আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা। যদিও আজ শনিবার বৃষ্টি অনেকটা কমবে। রবিবার কালীপুজোর দিন সরবে কালো মেঘ। ওই দিন রোদ ঝলমলে আকাশ থাকার সম্ভাবনাও রয়েছে।
এদিন ভোরের দিকে বৃষ্টির সঙ্গে শহর-শহরতলিতে ছিল ঝোড়ো-শীতল হাওয়ার দাপট। জলেও হালকা শিহরণ। অবশ্য রাত থেকেই শীতশীত ভাব অনুভব করেছে শহরবাসী। ভোরের দিকে হালকা চাদর না নিলে রীতিমতো শীত করছে। বৃষ্টির হাত ধরে জেলাগুলিতে ভরপুর শীতের আমেজ। এদিন পুরুলিয়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে দাঁড়ায় ১৮ ডিগ্রিতে। শ্রীনিকেতন ১৯.২, বর্ধমান-বাঁকুড়া ১৯.৩। বর্ধমান-আসানসোল ১৮-র ঘরে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের উপমহানির্দেশক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, শীতের এই আমেজ অস্থায়ী। আগামী দু’-তিনদিন পর থেকেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেড়ে স্বাভাবিক বা তার বেশি হয়ে যাবে। হঠাৎ কেন এই পরিস্থিতি?
[ আরও পড়ুন: চক্ররেলের উপর ভেঙে পড়ল বিদ্যুতের খুঁটি, আহত ২ ]
সঞ্জীববাবুর কথায়, নিম্নচাপের কারণে গত তিনদিন ধরেই বৃষ্টি চলছে দক্ষিণবঙ্গে। রোদের দেখা না মেলায় দিনের তাপমাত্রা বাড়তে পারেনি। তিনি জানান, গত কয়েকদিন আগে শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যা ছিল, বৃষ্টির কারণে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সেখানে এসে ঠেকেছে। ধারাবাহিকভাবে নেমেছে সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও। যদিও মেঘ কাটলেই ফের তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আসলে শীত নির্ভর করে উত্তুরে হাওয়ার উপর। উত্তুরে হাওয়ার গতি যত বাড়বে রাজ্যে শীতের দাপটও তত বাড়বে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় নিম্নচাপ বা ঘূর্ণাবর্তের জন্য গোঁসাঘরে খিল দেয় উত্তুরে হাওয়া।
The post হেমন্তের সকালেই শিরশিরানি, তবে কি পৌষের আগেই শীতের পরশ? appeared first on Sangbad Pratidin.