সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাঁর মন্তব্যে দেশজুড়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছিল। হুঁশিয়ারি এসেছিল দেশের সবচেয়ে বড় চিকিৎসকদের সংগঠনের পক্ষ থেকেও। এমনকী দু’পাতার কড়া চিঠি লিখেছিলেন খোদ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন। শেষপর্যন্ত অবশ্য নিজের ভুলটা স্বীকারই করে নিলেন যোগগুরু বাবা রামদেব (Baba Ramdev)। পাশাপাশি অ্যালোপ্যাথি নিয়ে কটূ মন্তব্য করার জন্য ক্ষমা চাইলেন। শুধু তাই নয়, নিজের ওই মন্তব্য প্রত্যাহারও করে নিলেন রামদেব। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে পালটা চিঠি লেখার পাশাপাশি টুইটও করেন তিনি।
রামদেবের বক্তব্যের পরই গোটা দেশ যোগগুরুর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিল। এরপরই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী দু’পাতার চিঠি লিখে তাঁকে এই বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিতে বলেন। এরপরই জবাবে রামদেবের টুইট, “আপনার চিঠি আমি পেয়েছি। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ও বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে তা শেষ করতে আমি আমার মন্তব্য প্রত্যাহার করছি। আমরা আধুনিক চিকিৎসা পরিষেবা এবং অ্যালোপ্যাথির বিরুদ্ধে নই। আমরা বিশ্বাস করি অস্ত্রোপচার এবং জীবনদায়ী নানান সরঞ্জাম ও ওষুধের মাধ্যমে অনেকের প্রাণ বাঁচিয়েছে। আমি ওই সময় হোয়াটসঅ্যাপের একটি মেসেজ পড়ছিলাম। তাও আমার বক্তব্যে কারওর খারাপ লাগলে আমার ক্ষমা করবেন।” এর পরেই অবশ্য রামদেব অন্য একটি টুইটকে রিটুইট করেন। সেটিতে আবার বলা ছিল, ‘‘যোগ ও আয়ুর্বেদই আমাদের পূর্ণ স্বাস্থ্যকে রক্ষা করে। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতা রয়েছে।”
[আরও পড়ুন: চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’, আরও ২৫টি ট্রেন বাতিল করল পূর্ব রেল, দেখে নিন তালিকা]
প্রসঙ্গত, এর আগে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল এক ভিডিওতে যোগগুরুকে বলতে শোনা গিয়েছিল,”অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা আসলে বোকামি। চিকিৎসার নামে তামাশা চলে। লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যাচ্ছে শুধুমাত্র অ্যালোপ্যাথি ওষুধ খেয়ে।” যোগগুরুর দাবি ছিল, করোনার বিরুদ্ধে একের পর এক অ্যালোপ্যাথি ওষুধ ব্যর্থ হচ্ছে কারণ, ওই চিকিৎসাপদ্ধতিতে রোগের আসল কারণ অনুসন্ধানই করা হয় না। যদিও পরে বিতর্কের জেরে এই মন্তব্য নিয়ে সাফাই দেয় তাঁর সংস্থা পতঞ্জলি। রামদেবের সংস্থার দাবি, এটা একটা গোপন বৈঠক ছিল। আর স্বামীজি হোয়াটসঅ্যাপে আসা একটি মেসেজ সকলকে পড়ে শোনাচ্ছিলেন শুধু। তাঁর এই ভিডিও সম্পাদিত এবং ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। কিন্তু তাতে চিড়ে ভেজেনি।
এরপর দেশের অন্যতম বৃহৎ চিকিৎসক সংগঠন বাবা রামদেবের এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করে। গোটা দেশের জনগণও চিকিৎসকের পাশে দাঁড়িয়ে যোগগুরুর পালটা সমালোচনায় মুখর হয়। তীব্র বাক্যবাণে বিদ্ধ করতে থাকেন। এরপরই চিঠি লিখে যোগগুরুকে মন্তব্য প্রত্যাহারও করতে বলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। যদিও রামদেব তাঁর মন্তব্য প্রত্যাহার করে নেওয়ায় পালটা আবার প্রশংসাও করেছেন হর্ষবর্ধন।