অর্ণব আইচ: মায়ের উপর অত্যাচার হতে দেখে বাবার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল একরত্তি মেয়েটি। তাই মেয়েকেও বেধড়ক মার বাবার। বহু বছর ধরে সহ্য করে ছিলেন গৃহবধূ। শেষ পর্যন্ত স্বামীর বিরুদ্ধে তাঁকে নির্যাতনের সঙ্গে সঙ্গে বালিকা কন্যার উপরও নির্যাতনের অভিযোগ তুললেন তিনি। মেয়ের উপর অত্যাচারের অভিযোগ দায়ের হল বাবার বিরুদ্ধে। দক্ষিণ কলকাতার কালিকাপুরের বাসিন্দার বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রী ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ ধারায় বধূ নির্যাতন ও ৭৫ জুভেনাইল জাস্টিস কেয়ার অ্যান্ড প্রোটেকশন অ্যাক্টে তাঁদের মেয়ের উপর অত্যাচারের অভিযোগ দায়ের করেছেন। গড়ফা থানায় এই অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
[উপাচার্য ও কলেজ অধ্যক্ষদের সঙ্গে নবান্নে জরুরি বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী]
পুলিশ জানিয়েছে, মুকুন্দপুর অঞ্চলের কালিকাপুরের বাসিন্দা গৃহবধূর মূল অভিযোগ তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধেই। ১৩ বছর আগে মহিলার বিয়ে হয়। স্বামী গাড়ি চালকের কাজ করেন। বিয়ের পর প্রথম কয়েকটি বছর দম্পতির খারাপ কাটেনি। তাঁদের একটি কন্যাসন্তান জন্ম নেয়। কিন্তু কয়েক বছর আগে থেকে চিড় ধরে দাম্পত্যে। বিভিন্ন কারণে শুরু হয় পারিবারিক অশান্তি। এলাকার বাসিন্দারাও মাঝেমধ্যে চিৎকার চেঁচামেচি শুনতে পেতেন। বুঝতেন, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শুরু হয়েছে ঝগড়া। গৃহবধূর অভিযোগ, দাম্পত্য কলহকে কেন্দ্র করে তাঁর স্বামী বেশি গোলমাল শুরু করেন। প্রথম দিকে ওই ব্যক্তি মানসিকভাবে অত্যাচার চালাতেন তাঁর স্ত্রীর উপর। ধীরে ধীরে তাঁকে মারধর করতে শুরু করেন স্বামী। বিশেষ করে কর্মস্থল থেকে ফেরার পর সামান্য কারণ ঘিরেই শুরু হত অত্যাচার। প্রথমে আড়াল থেকে দেখত দম্পতির ছোট্ট মেয়েটি। পড়তে বসার পর মা-বাবার মধ্যে গোলমাল তার মনে দাগ কাটত। সে ভাল করে পড়াশোনা করতে পারত না। মাকে চোখের সামনে কান্নাকাটি করতে দেখে কেঁদে ফেলত মেয়েও। মায়ের চোখের জল মেয়ে মুছিয়ে দিত। কিন্তু তাতে বাবার আচরণের হেরফের হত না। গৃহবধূর অভিযোগ, তাঁর উপর প্রায়ই চলত অত্যাচার। মাকে মারধর করতে দেখে একবার রুখে দাঁড়ায় মেয়ে। বাবার আচরণের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে সে। তখন মাকে ছেড়ে মেয়েকে মারধর শুরু করেন বাবা। মেয়ে তারস্বরে কাঁদতে থাকলেও বাবার মন গলেনি। আবার চলে মার। গৃহবধূ আটকান তাঁর স্বামীকে।
[ছাগলের কানেই শাপমুক্তি, অঙ্গবিকৃতি থেকে মুক্তি পেলেন ২৫ জন]
গৃহবধূর অভিযোগ, যতবার এভাবে মেয়ে রুখে দাঁড়িয়েছে, ততবারই বাবা তার উপর অত্যাচার চালিয়েছেন। মারধর করেছেন মেয়েকে। স্বামীর অত্যাচার সহ্য করে নিয়েছিলেন মহিলা। কিন্তু মেয়ের উপর অত্যাচার মেনে নেননি তিনি। চোখে জল নিয়েই চলে যান গড়ফা থানায়। তাঁর ও মেয়ের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সূত্রে খবর, বালিকার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুরো অভিযোগ যাচাই করতে মা ও মেয়ের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলা হবে। তার ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
The post মাকে মার বাবার, রুখে দাঁড়িয়ে প্রহৃত মেয়েও appeared first on Sangbad Pratidin.