সৌরভ মাজি, বর্ধমান: জিআরপি, রেলের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের তৎপরতায় বর্ধমান স্টেশনের প্ল্যাটফর্মেই সন্তানপ্রসব দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রীর। মা ও সদ্যোজাত কন্যাসন্তান দুজনকেই পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে দুজনই সুস্থ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
রেল ও জিআরপি সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার হাওড়া থেকে আপ মিথিলা এক্সপ্রেসে উঠেছিলেন গোবিন্দ কুমার। সঙ্গে ছিলেন সন্তানসম্ভবা স্ত্রী নিশা কুমারী। তাঁদের বাড়ি বিহারের পূর্ব চম্পারনের ধানহি, সুগৌলি এলাকায়। ট্রেনে চাপার কিছু পরেই প্রসব বেদনা ওঠে নিশার। সন্ধ্যা নাগাদ ট্রেনের অন্য এক যাত্রী বিষয়টি বুঝতে পেরে সহায়তার জন্য বর্ধমান জিআরপিতে ফোন করেন। জিআরপির তরফে নিশার জন্য সবরকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়। সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিট নাগাদ ট্রেন বর্ধমানের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঢোকে। তখন জিআরপির লেডি কনস্টেবল রেখা বেসরা, লেডি সিভিক ভলান্টিয়ার রজনী তিওয়ারিরা নিশাকে তাঁর স্বামী গোবিন্দর সহযোগিতায় প্ল্যাটফর্মে নামিয়ে আনেন। তাঁকে প্ল্যাটফর্মের একটি বেঞ্চে শোয়ানো হয়।
[আরও পড়ুন: লটারি জেতার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুকুরে মিলল যুবকের দেহ, টাকার লোভে খুন?]
খবর দেওয়া হয় রেলের চিকিৎসক কে মাইতিকে। চিকিৎসক বুঝতে পারেন প্রসব আসন্ন। সেখানে তিনি সবরকম প্রস্তুতি নিতে বলেন। জিআরপি ওসি চিন্তাহরণ সিনহা পুরো এলাকা খালি করে দেন। হকার, যাত্রী সকলকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পুরো এলাকা স্যানিটাইজ করা হয়। পুরো জায়গাটা কাপড় দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। চিকিৎসককের গ্লাভস আনানো হয়। অল্প সময়ের চেষ্টায় ফুটফুটে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন নিশা। সব যন্ত্রণা ভুলে তখন নিশার মুখে হাসি। হাসি সকলের মুখে। রেখা, রজনীরা কোলে তুলে নেন সদ্যোজাতকে।
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পর নিশা ও সদ্যোজাতকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মা ও শিশুকন্যা সুস্থ রয়েছে। জিআরপি, রেলের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী সকলের তৎপরতায় সুস্থ শিশু পৃথিবীর প্রথম আলো দেখল প্ল্যাটফর্মেই। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, “রেল, জিআরপির এই প্রচেষ্টা খুবই গর্বের বিষয়। একটি প্রাণকে সুস্থভাবে এই পৃথিবীতে আনার জন্য এই উদ্যোগ সাধুবাদযোগ্য। রেল সবসময়ই চেষ্টা করে যাত্রীদের পাশে থাকতে, সবরকম সহায়তা দিতে। মা ও সদ্যোজাত সুস্থ রয়েছে এর থেকে আনন্দের কিছু হতে পারে না।”