সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৫টি নেকড়ে খাঁচাবন্দি হলেও স্বস্তি ফিরছে না উত্তরপ্রদেশের বাহরাইচে। নরখাদক দলের শেষ সদস্যই এখন ত্রাস হয়ে উঠেছে বাহরাইচ জেলার গ্রামগুলিতে। ফের রাতের অন্ধকারে এক মহিলার উপর হামলা চালাল নেকড়ে। ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁর ঘাড় কামড়ে ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলে। কার্যত প্রতি রাতে এমন আক্রমণের ঘটনায় আতঙ্কিত গোটা এলাকা।
বনদপ্তরের তরফে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে বাহরাইচ জেলার সিনগিয়া নাসিরপুর গ্রামের এক বাড়িতে হামলা চালায় নেকড়েটি। রাতে এই এলাকায় টহল দিচ্ছিল বনকর্মী ও গ্রামবাসীরা তার পরও সকলের নজর এড়িয়ে ২৮ বছর বয়সি ওই মহিলার বাড়িতে হানা দেয় নেকড়েটি। ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁর ঘাড় কামড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলে। মহিলার চিৎকার শুনে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে হাজির হন গ্রামবাসীরা। বেগতিক বুঝে চম্পট দেয় নেকড়েটি। এর পর তার আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত ২ মাস ধরে উত্তরপ্রদেশের বাহরাইচ জেলায় আতঙ্কের অপর নাম হয়ে উঠেছিল ৬ সদস্যের এক নেকড়ের দল। রাতের অন্ধকারে নরখাদকের হামলায় ইতিমধ্যেই প্রাণ গিয়েছে ১০ জনের। যার মধ্যে ৯ জনই শিশু। পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরও ৩৬ জন। এই পরিস্থিতিতে দলের ৬ সদস্যের মধ্যে খাঁচা পেতে ৫টি নেকড়েকে ধরা হলেও বাকি একটি নেকড়ের হানায় প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে এলাকাবাসীর। নানা জায়গায় খাঁচা পেতে তাকে ধরার চেষ্টা হলেও কোনও ফল হয়নি। বরং সঙ্গীদের হারিয়ে সেটাই বেপরোয়া ভাবে আক্রমণ চালাচ্ছে সেটি।
পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে সরকারের তরফে নেকড়ে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লাঠি হাতে পাহারায় নামেন এলাকাবাসী। তাতেও অবশ্য আক্রমণ থামানো যায়নি। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর আকার নিয়েছে যে নেকড়ে হামলার ঘটনায় উদ্বিগ্ন উত্তরপ্রদেশে সরকার রাজ্যে 'বন্যপ্রাণ বিপর্যয়' ঘোষণা করেছে। শেষ নেকড়েকে পাকড়াও না করা পর্যন্ত বাহরাইচে জারি থাকছে ‘অপারেশন ভেড়িয়া’। বনদপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, মানুষখেকো নেকড়ে ধরতে ২৫টি দল গঠন করার পাশাপাশি নিযুক্ত করা হয়েছে ১৮ জন শার্পশুটার। ফলে খাঁচা পাতার পাশাপাশি বন্দুক হাতে চলছে নেকড়ে ধরার অভিযান।