সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্কুল খুলতেই পড়ল লাশ! মণিপুরে জঙ্গিদের নিশানায় এবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রায় দু’মাস পর জাতিদাঙ্গায় অগ্নিগর্ভ রাজ্যেটিতে গতকাল বুধবার স্কুল খুলেছে। তারপরের দিনই অর্থাৎ আজ বৃহস্পতিবার একটি স্কুলের পাশে জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হন এক মহিলা।
গত দু’মাস ধরে মেতেই বনাম কুকি সম্প্রদায়ের সংঘর্ষে জ্বলছে উত্তরপূর্বের এই রাজ্য। গত সোমবার মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিং ঘোষণা করেছিলেন, ৫ জুলাই থেকে রাজ্যে স্কুল খুলতে চলেছে। প্রাথমিক পর্বে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের পাঠদান শুরু হবে। সেই মতো বুধবার থেকে স্কুল খুলে দেওয়া হয় রাজ্যে।
জানা গিয়েছে, একটি স্কুলের পাশে জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হন এক মহিলা। ঘটনাটি ঘটেছে ইম্ফল ওয়েস্টের (Imphal) শিশু নিষ্ঠা নিকেতন স্কুলের কাছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুষ্কৃতীদের পরিচয় জানা যায়নি। মহিলার দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। স্কুল খোলার পরেরদিনই এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। মনে করা হচ্ছে, এবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিশানা করছে জঙ্গিরা। এহেন ঘটনার নেপথ্যে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র থাকতে পারে।
[আরও পড়ুন: ভারতের মতো প্রতিবেশী দেশগুলিতেও জনপ্রিয় হবে BJP! নয়া উদ্যোগ গেরুয়া শিবিরের]
মনিপুরে মে মাস থেকে চলতে থাকা জাতি দাঙ্গার প্রভাব পড়েছে শিক্ষাক্ষেত্রতেও। দু’মাস ধরে বন্ধ স্কুল (School)। পড়ুয়াদের কথা ভেবে মুখ্যমন্ত্রী বিরেন সিং প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত স্কুল খোলার নির্দেশ দেন। তবে তিনি জানান, বন্ধ থাকবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ৯৬টি স্কুল। তিনি বলেন, স্কুলগুলি মেরামত করা হলে এবং যারা সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁদের বাড়ি পাঠানো হয়ে গেলে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারাও চাইলে স্কুলে ফিরতে পারবে। তাঁর সেই নির্দেশ মতো বুধবার স্কুল খুলেছিল। কিন্তু এই অপ্রীতিকর ঘটনার পর নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে সেখানে।
প্রসঙ্গত, মেতেই ও কুকি জাতির সংঘর্ষে দু’মাসে এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ১২২ জন নিহত হয়েছেন মণিপুরে। আহত তিন হাজারের উপর। ঘরছাড়া লক্ষাধিক। সাধারণ জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত। এমনকী রাজ্যের একাধিক মন্ত্রীর বাড়িতেও হামলা হয়েছে। বিরোধীরা মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি তুলেছে। সপ্তাহ খানেক আগে মুখ্যমন্ত্রী বিরেন সিং পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন। পরে অবশ্য মত বদল করেন। ব্যাপক অশান্তির মধ্যেই সে রাজ্যে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তার পরও পরিস্থিতি পালটায়নি। অন্যদিকে মণিপুরের দাঙ্গার প্রভাব পড়ছে পাশের রাজ্যগুলিতেও। আশ্রয়ের খোঁজে পড়শি রাজ্যে ভিড় করছেন বহু মানুষ।