shono
Advertisement

মোবাইলে মগ্ন থাকায় শাশুড়ির বকুনি! অভিমানে ২ সন্তানকে নিয়ে কুয়োয় ঝাঁপ বধূর

দুই শিশুরই মৃত্যু হয়েছে।
Posted: 06:35 PM Jul 20, 2021Updated: 09:28 PM Jul 20, 2021

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: সংসারের কাজের মধ্যেই মোবাইলে ব্যস্ত ছিলেন বধূ! তা নিয়ে খোঁটা দিচ্ছিলেন শাশুড়ি। সেই ‘অপমান’ সহ্য করতে না পেরে কোলের দুই সন্তানকে কাপড়ের সঙ্গে বেঁধে কুয়োয় ঝাঁপ দিলেন বধূ। মঙ্গলবার পুরুলিয়া (Purulia) মফস্বল থানার চাকড়া গ্রামের এই ঘটনায় ওই দুই শিশুরই মৃত্যু হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন গৃহবধূ। বর্তমানে দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Advertisement

পুরুলিয়া মফস্বল থানার পুলিশ জানিয়েছে, শাশুড়ি ওই বধূকে বকাঝকা করার কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। দুই সন্তান-সহ বধূকে ওই কুয়ো থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় বাসিন্দারাই হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এই ঘটনায় পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে।

[আরও পড়ুন: ৫ ঘণ্টা পরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি মহেশতলার আগুন, ঘটনাস্থলে Sujit Bose, নামানো হল রোবট]

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত দুই শিশুর নাম পূর্ণিমা মাহাতো(৫) ও রাখি মাহাতো(৩)। জখম মায়ের নাম শীতলা মাহাতো (৩০)। তাঁর শরীরে একাধিক চোট রয়েছে। এদের সকলেরই বাড়ি ওই চাকড়া গ্রামে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শীতলাদেবীর স্বামী লক্ষণ মাহাতো ফি দিনের মতো পুরুলিয়া শহরে একটি হার্ডওয়ারের দোকানে দিনমজুরির কাজে এসেছিলেন। লক্ষণরা তিন ভাই। একান্নবর্তী পরিবার তাঁদের। ওই সংসারেই থাকেন লক্ষণ মাহাতোর মা-ও। পক্ষাঘাতে শয্যাশায়ী তিনি। অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই তিনি তিন বউমাকেই গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ।

এদিনও ঠিক তাই হয়েছিল। শীতলাদেবী সংসারের কাজের মধ্যেই মোবাইলে ব্যস্ত ছিলেন বলে অভিযোগ! তখনই শাশুড়ি ‘রে রে’ করে ওঠেন বলে অভিযোগ। ব্যস, সঙ্গে সঙ্গে দুই কোলের সন্তানকে কাপড়ে বেঁধে বাড়ি থেকে প্রায় ৩৫০ মিটার দূরে থাকা কুয়োয় ঝাঁপ দিয়ে দেন ওই বধূ। দুই বোনকে নিয়ে শীতলাদেবী এভাবে ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় তার ১২ বছরের ছেলে পরিতোষও পেছনে পেছনে ছুটে আসে। কিন্তু মাকে আটকাতে পারেনি সে। ছুটে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিষয়টি জানায়। ঘটনাস্থলে যান ওই এলাকার এক সিভিক ভলান্টিয়ারও।

[আরও পড়ুন: শিশুদের শরীরে আঘাত হানতে পারবে না করোনার তৃতীয় ঢেউ, দাবি শহরের চিকিৎসকদের]

পুরুলিয়ার মফস্বল থানার পুলিশ জানিয়েছে, ওই বধূ দুই সন্তানকে নিয়ে কুয়োয় ঝাঁপ দেওয়ার সময় তার পাঁচ বছরের মেয়েটি আলাদা হয়ে যায়। বেঁধে থাকা কাপড় ছিঁড়ে যাওয়ায় ওই মেয়েটি একেবারে কুয়োর নিচে চলে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা ও পুলিশ উদ্ধারকাজ শুরুর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বধূকে তুলতে সক্ষম হন। কিন্তু ওই দুই শিশুকে কাঁটার (লোহার যন্ত্র) সাহায্যে তুলতে হয়। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে এলে দুই শিশুকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকেন শীতলা দেবী। তাঁর জন্যই এমন ঘটনা ঘটল বলে পুলিশকে জানান তিনি। সন্তানদের হারিয়ে শোকে মা বলতে থাকেন, ‘আমি আর বেঁচে কী করব!” এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোকস্তব্ধ ওই গ্রামও।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup ছাঁদনাতলা toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার