সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৩৬ বছরের এক HIV পজিটিভ মহিলার শরীরে ২১৬ দিন ধরে বাসা বেঁধে ছিল করোনা ভাইরাস (Coronavirus)! সম্প্রতি এমনই এক রোগীর কথা জানালেন দক্ষিণ আফ্রিকার (South Africa) গবেষকরা। কেবল অতদিন ধরে সংক্রমণ থাকাই নয়, ওই সময়ের মধ্যে ভাইরাস ৩০ বারের বেশি বার চরিত্র বদল করেছে বা মিউটেশন ঘটিয়েছে। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে গোটা বিশ্বকে রক্তচক্ষু দেখানো এই মারণ ভাইরাসের এমন কাণ্ড এর আগে চোখে পড়েনি গবেষকদের। সেই কারণেই এমন ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছেন সারা দুনিয়ার গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা।
মেডিক্যাল জার্নাল ‘মেডআরএক্সআইভি’-তে প্রকাশিত হয়েছে একটি গবেষণাপত্র। সেখানেই জানা গিয়েছে ওই মহিলার কথা। ২০০৬ সালে তাঁর শরীরে প্রথম বার এইচআইভি ধরা পড়ে। তারপর থেকে ক্রমশই খারাপ হয়েছে তাঁর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এরপর ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি করোনা আক্রান্ত হন। দেখা গিয়েছে তারপর থেকে তাঁর শরীরে ১৩ বার ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন মিউটেশন ঘটিয়েছে। সেই সঙ্গে আরও ১৯ রকমের জিনগত পরিবর্তন হয়েছে তার। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ৩০ বারেরও বেশি বার মিউটেশন ঘটিয়েছে ভাইরাস। স্বাভাবিক ভাবেই এই ধরনের কেস থেকে কোভিড-১৯-এর (COVID-19) মিউটেশনের ক্ষমতা সম্পর্কে আরও নতুন তথ্য জানা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
[আরও পড়ুন: মৃত্যুর খবর ‘রটনা’, বহাল তবিয়তেই রয়েছেন লাদেনের সহযোদ্ধা]
তবে এখনও স্পষ্ট নয়, ওই মহিলার শরীর থেকে সংক্রমণ আরও কারও দেহেও ছড়িয়েছে কিনা। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণ কোনও ব্যক্তির তুলনায় একজন এইচআইভি পজিটিভ রোগীর করোনায় মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ২.৭৫ গুণ বেশি। যদিও এক্ষেত্রে আক্রান্ত মহিলাটি প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন। তাঁর শরীরে দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা ব্রিটেনে মেলা করোনার স্ট্রেনগুলি পাওয়া গিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার কোয়াজুলু নাটাল এলাকার মতো যেসব জায়গায় এইচআইভি পজিটিভ রোগীর সংখ্যা বেশি, সেখান থেকেই নতুন ধরনের স্ট্রেনের সন্ধান মিলেছে বেশি। এবং এটা কোনও কাকতালীয় ব্যাপার নয়। তাঁরা মনে করছেন, সম্ভবত এইচআইভি পজিটিভ রোগীর শরীর সারা বিশ্বেই করোনার নানা স্ট্রেনের ফ্যাক্টরি হয়ে উঠতে পারে। তবে এবিষয়ে নিশ্চিত হতে আরও গবেষণার প্রয়োজন।