অর্ণব আইচ: বড়দিন আর নববর্ষের রাতে ভিড়ের মধ্যে সুযোগ পেলেই ইভটিজিংয়ের চেষ্টা! এই বছর সেই চেষ্টা করলেই বিপদ। কারণ, এবার বড়দিন থেকেই তৈরি রয়েছে কলকাতা পুলিশের ‘টিম উইনার্স’। গত কয়েক মাস ধরেই উল্লেখযোগ্যভাবে রাস্তায় ইভটিজার ও শ্লীলতাহানির অভিযুক্তদের ধরেছে মহিলা পুলিশের বিশেষ বাইক বাহিনী ‘উইনার্স’। গত পুজোর সময় শহরের বহু জায়গা থেকে ইভটিজারদের কবজা করেছিল ‘উইনার্স’রা। এবার তাদের দেখা যাবে পার্ক স্ট্রিট ও তার সংলগ্ন এলাকায়। এই বিষয়ে ডিসি (সাউথ) মিরাজ খালেদ জানান, ‘উইনার্স’-এর ২৫ জনের টিম বড়দিনের আগে থেকেই তৈরি রয়েছে। সারা রাত ধরে টহল দিয়ে মহিলাদের সম্মান বাঁচাবেন পুলিশের এই মহিলারাই।
[বিরোধী জোটে মমতাই মুখ, দেশ বাঁচানোর আরজি ফারুকের]
এবার উইকএন্ডের পর বড়দিন। তাই বড়দিনের দু’দিন আগে থেকেই পার্ক স্ট্রিট, শেক্সপিয়র সরণির রাস্তায় জমে উঠবে ভিড়। এছাড়াও ক্রিসমাসের কেনাকাটার ভিড় জমতে শুরু করেছে রাস্তায়। পুলিশ জানিয়েছে, বড়দিন থেকে শুরু করে নববর্ষ পর্যন্ত পার্ক স্ট্রিট এলাকায় ভিড়ের মধ্যে ইভটিজিং ও শ্লীলতাহানির প্রবণতা থাকে কিছু যুবকের। আবার রাতে পার্ক স্ট্রিট বা শেক্সপিয়র সরণির পানশালার মধ্যে অথবা পানশালা থেকে মদ্যপ অবস্থায় বেরিয়ে অনেকে মহিলাদের কটূক্তি করে। অনেক সময় তা নিয়ে মারপিটও বেঁধে যায়। আইন-শৃঙ্খলাজনিত সমস্যা দেখা যায়। এই বছর এই ধরনের সমস্যা রুখতে এগিয়ে এসেছেন ‘উইনার্স’রা। সকাল থেকেই মহিলা পুলিশের এই বাহিনীর সদস্যারা স্কুটি করে শহরজুড়ে ঘুরে বেড়ান। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, বড়দিনের আগে থেকে ‘উইনার্স’-এর টিম বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে পার্ক স্ট্রিটের উপর। পার্ক স্ট্রিটের রাস্তাগুলিতে স্কুটি নিয়েই টহল দিতে শুরু করেছেন ‘উইনার্স’রা। ক্রিসমাস ইভ, বড়দিন বা ৩১ ডিসেম্বর রাতে পার্ক স্ট্রিটের বহু জায়গায় মানুষের ভিড়ে গাড়ি চলাচল করতে পারে না। সেই ক্ষেত্রে স্কুটি ছেড়ে হেঁটে টহল দেবেন ‘উইনার্স’-এর সদস্যারা। তাঁদের নজর থাকবে ভিড়ের দিকে। ভিড়ের মধ্যে ইভটিজিংয়ের কোনও ঘটনা চোখে পড়লেই এগিয়ে আসবেন তাঁরা। আবার অনেক সময়ই রাস্তায় ইভটিজিং বা শ্লীলতাহানির ‘শিকার’ মহিলারা অভিযোগ জানাতে লজ্জাবোধ করেন। সামনে ‘উইনার্স’দের দেখলে তাঁরাও সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারবেন। আবার কোনও মহিলা অস্বস্তিতে পড়েছেন বুঝতে পারলে বা চিৎকার করে উঠেছেন শুনলে সঙ্গে সঙ্গে হাজির হবেন ‘উইনার্স’রা।
[বড়দিন ও বর্ষশেষে গভীর রাতেও চলবে মেট্রো, সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষের]
জানা গিয়েছে, মহিলা পুলিশের এই বাহিনীকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা যেমন শহরজুড়ে স্কুটি চালিয়ে ঘুরতে পারেন, তেমনই তাঁরা দৌড়ে অপরাধী ধরা ও কেউ পালানোর চেষ্টা করলে ক্যারাটের প্যাঁচে তাকে ধরাশায়ী করার দক্ষতা রাখেন। প্রয়োজনে যে দৌড়ে কলার ধরে ইভটিজারদের তাঁরা ধরে নিয়ে আসতে পারেন, সেই প্রমাণও বহুবার পেয়েছে কলকাতা। বিশেষ করে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, ময়দান চত্বরে বহুবার ‘উইনার্স’দের হাতে ধরা পড়েছে ইভটিজাররা। শীতের ছুটিতেও চিড়িয়াখানা, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল-সহ যে জায়গাাগুলিতে মানুষের ভিড় হয়, সেখানে সকাল থেকেই হাজির হন ‘উইনার্স’রা। বড়দিন ও নববর্ষে সারারাত তাঁরা মহিলাদের ইভটিজিং ও শ্লীলতাহানির হাত থেকে বাঁচাবেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
The post বড়দিন ও নববর্ষে ইভটিজারদের মোকাবিলায় শহরে ‘উইনার্স’ appeared first on Sangbad Pratidin.