সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গোটা দেশ তালিবানের (Taliban) দখলে। শিবরাত্রির সলতের মতো বেঁচে স্রেফ রাজধানী কাবুল (Kabul)। তাও তালিবানের দখলদারির দাপটে সপ্তাহান্তেই হয়ত কাবুলে উড়তে দেখা যাবে জঙ্গিদের পতাকা। দেশের স্বার্থে তালিবানকে ক্ষমতা ভাগাভাগি করে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে আফগান সরকার। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে কার্যত অসহায় আফগানিস্তানের (Afghanistan) প্রশাসন। কান্নাভেজা গলায় দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দিলেন প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানি (Ashraf Ghani)। বললেন, ”দেশের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে আমার কাজ, দেশবাসীকে রক্ষা করা। দেশ এই মুহূর্তে গভীর সংকটের মধ্যে রয়েছে। আমি রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের পথ খুঁজছি। আন্তর্জাতিক মহলের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি।” মাঝে তিনি আক্ষেপের সুরে এও জানান, গত ২০ বছরে যা যা ফিরে পাওয়া গিয়েছিল, তা সবই আবার হারিয়ে গেল।
শনিবার হেরাত (Herat) প্রদেশে অবস্থিত সালমা বাঁধ, যা কিনা ভারত-আফগানিস্তানের বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে পরিচিত, তাও দখল করে নিয়েছে তালিবানি জঙ্গিরা। গতমাসে এই বাঁধে জঙ্গি হামলায় ১০ জনের প্রাণহানি ঘটে। চলতি মাসের গোড়াতেও এই বাঁধ দখলের চেষ্টা করছিল তারা। কিন্তু আফগান সেনার পালটা হামলায় রণে ভঙ্গ দেয় জঙ্গিরা। কিন্তু শনিবার সালমা বাঁধও তাদের দখলে চলে যায়। বড় বিপদের আশঙ্কায় কাবুলে অবস্থিত বিভিন্ন দেশের দূতাবাস থেকে কর্মীদের সরানো হচ্ছে। সদাসতর্ক ভারতও। এই অবস্থায় আফগান প্রেসিডেন্টের বার্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূ্র্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। দেশের এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তিনি দায়িত্ব নিয়ে ইস্তফা দিতে পারেন বলে গুঞ্জন উঠেছিল। কিন্তু শনিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে তা নিয়ে কোনও ইঙ্গিতই দেননি আশরফ ঘানি।
[আরও পড়ুন: নরখাদক হয়ে উঠতে পারে দুই শিশুপুত্র! ‘বিশ্বকে বাঁচাতে’ সন্তানদের খুন বাবার]
আফগানিস্তানের স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেলে শনিবার প্রেসিডেন্টের ভাষণ শুনে অনেকেই বলছেন, ব্যথিত আশরফ ঘানি। খুব আতঙ্কিতও। প্রেসিডেন্ট বলেন, ”দেশকে এতটা অস্থির পরিস্থিতি থেকে বাঁচাতে হবে। আফগানিস্তানের নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা বিভাগকে সুরক্ষিত করা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। আফগানিস্তানকে আরেকটা যুদ্ধের মুখে ঠেলে দেওয়া রুখতেই হবে।” কাবুলিওয়ালার দেশ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর থেকেই দেশটির দখল নিচ্ছে তালিবান। ফের এই দেশে শরিয়ত প্রতিষ্ঠা সময়ের অপেক্ষামাত্র।