সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিনের উপর চাপ বাড়াতে আমেরিকার অস্ত্র তিব্বত। সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে বলে সরাসরি বেজিংয়ের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছেন মার্কিন হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি।
বুধবার তিব্বত নিয়ে ‘ওয়ার্ল্ড পার্লামেন্টারিয়ান কনভেনশন’-এর অষ্টম সংস্করণে যোগ দিয়ে পেলোসি বলেন, “আজ তিব্বত ও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিয়ে আমি গর্বিত। আজ তিব্বত আমাদের ভাবিয়ে তুলছে। সেখানে চিন সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। তারা (চিন) তিব্বতের স্বকীয় পরিচয়, স্বশাসন বা বিশ্বাসকে আদৌ কোনও গুরুত্ব দেয় না এটা স্পষ্ট।” বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধেও কটাক্ষের সুরে পেলোসি বলেন, “আজ বাণিজ্যিক স্বার্থের কথা মাথায় রেখে আমরা যদি তিব্বতে মানবাধিকার লংঘন নিয়ে চিনের বিরুদ্ধে সরব না হই, তাহলে বিশ্বে অন্য কোথাও এমন ঘটনায় কথা বলার আমাদের নৈতিক অধিকার থাকবে না।”
[আরও পড়ুন: তিব্বতে সাঁড়াশি চাপ লালচিনের, বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মঠছাড়া করছে বেজিং]
বুধবার ওয়াশিংটনে শুরু হয়েছে তিব্বত নিয়ে আইনসভার সদস্যদের আন্তর্জাতিক সম্মেলন। এর উদ্যোক্তা নির্বাসিত তিব্বত সরকার। ওই সম্মেলেন যোগ দিয়েছেন ২৬টি দেশের প্রায় একশোজন প্রতিনিধি। তিব্বত (Tibet) সমস্যাআর সমাধান করা ও প্রদেশটির স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনাই এই সম্মেলনের উদ্দেশ্য। এর আগে ১৯৯৪ সালে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম ‘ওয়ার্ল্ড পার্লামেন্টারিয়ান কনভেনশন’। চিনা আগ্রাসনের মুখে তিব্বতের অস্তিত্ব রক্ষায় ভারত যে ভূমিকা নিয়েছিল তাকে সম্মান জানিয়ে সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গতবছর এক চাঞ্চল্যকর রিপোর্টে বলা হয়, বিদ্রোহের আশঙ্কায় লাসার উপর সাঁড়াশি চাপ তৈরি করে ভিক্ষুদের মঠছাড়া করছে কমিউনিস্ট দেশটি। তিব্বতের পার্শ্ববর্তী কুইংহাই প্রদেশের মঠগুলি থেকে বিক্ষুদের তাড়িয়ে দিচ্ছে চিন (China)। রেডিও ফ্রি এশিয়া জানিয়েছিল, গত অক্টোবরে ধর্মীয় গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে একটি নয়া আইন আনে চিন। ওই আইনে বলা হয়েছে, নাবালকদের ভিক্ষু হিসেবে মঠে রাখা যাবে না। শুধু তাই নয়, বিদ্রোহের আশঙ্কায় এবার তিব্বতের যাযাবর গোষ্ঠীর উপর ভয়াবহ অত্যাচার শুরু করেছে লালচিন। আর শিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমদের উপর বেজিংয়ের নির্যাতনের ঘটনা আন্তর্জাতিক মঞ্চে তীব্র আলোড়ন শুরু করেছে। এহেন পরিস্থিতিতে চিনের উপর চাপ সৃষ্টি করতে তৎপর হয়েছে আমেরিকা।