সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জোড়া ভূমিকম্পে 'মৃত্যুপুরী' মায়ানমার। লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। প্রকৃতির রোষে এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে হাজারের উপর মানুষ। আহত প্রায় ৩ হাজার। নিখোঁজ বহু। ফলে মৃত্যু আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা জুন্টা সরকারের। ইতিমধ্যে পড়শি দেশে ১৫ টন ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছে ভারত। এই দুঃসময়ে মায়ানমারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সহায়তা পাঠিয়েছে রাশিয়া-চিনও।

গতকাল শুক্রবার ভারতীয় সময় ১১টা ৫০ মিনিটে প্রথম ভূমিকম্পটি হয় মায়ানমারে। যার উৎপত্তিস্থল সেদেশের সাগাইং শহর থেকে ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে। সেই সময় কম্পন অনুভূত হয় বাংলাদেশের ঢাকা-সহ একাধিক জায়গায়। এর প্রভাব পড়ে ভারতেও। কেঁপে ওঠে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা, হাওড়া, হুগলি-সহ একাধিক জেলা ও সিকিমও। এছাড়া ভূমিকম্পের ব্যাপক প্রভাব পড়ে মায়ানমারের প্রতিবেশী থাইল্যান্ডেও। ভেঙে পড়ে একের পর এক বহুতল, ব্রিজ। যত সময় যায় শিরদাঁড়ায় কাঁপন ধরিয়ে দেওয়ার মতো ভূমিকম্পের একাধিক ভিডিও ভাইরাল হতে থাকে সোশাল মিডিয়ায়। ধীরে ধীরে জানা যায় প্রাণহানির সংখ্যা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ।
গতকাল থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ১৫ বার কেঁপেছে মায়ানমার। ১০ ঘণ্টার মধ্যে ১৪টি আফটারশক অনুভূত হয়। যার জেরে উদ্ধারকাজেও বেশ বেগ পেতে হয়। গোটা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে মায়ানমারের জুন্টা সরকার। এই কঠিন সময়ে বিভিন্ন দেশের কাছে পাশে থাকার আর্জি জানিয়েছে তারা। পাশাপাশি আজ শনিবার সরকার জানিয়েছে, ১০০২ জন প্রাণ হারিয়েছেন এই ভূমিকম্পে। আহত প্রায় ৩ হাজার। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে রয়েছেন বহু। চলছে উদ্ধারকাজ। ইতিমধ্যেই বিপর্যস্ত এলাকার হাসপাতালগুলোতের রক্তের সংকট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত থাইল্যান্ডও। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে ৩০ তলা বিল্ডিং থেকে শুরু করে একের পর এক বহুতল, হোটেল। ফাটল দেখা দিয়েছে রাস্তায়।
জানা গিয়েছে, ১৫ টন ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে মায়ানমারে পৌঁছেছে ভারতীয় বায়ুসেনার বিমান। শুকনো খাবার, তাঁবু, ওষুধপত্র, জেনারেটর-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস পাঠানো হয়েছে। সহায়তা পাঠিয়েছে চিন ও রাশিয়াও। ভূমিকম্প বিধ্বস্ত দেশটির পাশে থাকারব বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। প্রসঙ্গত, কম্পনের কেন্দ্রস্থল মায়ানমারের সাগাইং শহর ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল হিসেবেই পরিচিত। অদূর ভবিষ্যতে এখানে আরও বড় ভূমিকম্প হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।