সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রেসিডেন্ট রাইসির ‘অনুগত’ জাতীয় দল হেরেছে। বিশ্বকাপের (FIFA World Cup 2022) শেষ ষোলোয় ওঠার আগেই বিদায় নিয়েছে ইরান। সেই আনন্দে মেতেছিলেন এক ‘হিজাব বিদ্রোহী’। আর এই ‘দেশবিরোধী’ কাজের জন্য তাঁকে নিজের প্রাণ দিয়ে খেসারত দিতে হল। মানবাধিকার সংগঠনগুলির দাবি, নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে মৃত্য়ু হয়েছে ইরানের (Iran) ওই নাগরিকের।
মঙ্গলবার রাতে গ্রুপ পর্বে আমেরিকার কাছে হেরে কাতার বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে ইরান। প্রথম থেকেই জাতীয় দলের বিরুদ্ধে ফুটছিল ইরানের নাগরিকরা। কারণ, কাতার বিশ্বকাপে রওনা দেওয়ার আগে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সঙ্গে সাক্ষাত করেছিলেন জাতীয় দলের খেলোয়াররা। সেই সাক্ষাতের একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দেখা যায়, স্বৈরাচারী রাইসির সামনে মাথা নত করে আছেন চেসমিরা। তাঁকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন। এই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন ইরানের নাগরিকরা। তাঁদের অভিযোগ, গোটা দেশ রাইসির বিরুদ্ধে আন্দোলনে শামিল। শাসকবিরোধী বিক্ষোভে প্রাণ যাচ্ছে তাঁদের। আমজনতার প্রশ্ন, এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় দলের খেলোয়াররা স্বৈরাচারী শাসকের কাছে কেন মাথা নত করল ওঁরা? এই ঘটনার পর থেকেই দেশবাসীর সমর্থন হারিয়েছে ইরানের জাতীয় ফুটবল দল।
[আরও পড়ুন: প্রশ্নপত্র ফাঁসের পর ডিএলএড পরীক্ষাবিধিতে বদল, ফের জারি কড়া নির্দেশিকা]
চেসমিদের হতাশাজনক পারফরম্যান্সের জেরে বিশ্বকাপের প্রথম পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছে ইরান। শেষ ম্যাচে হেরেছে আমেরিকার কাছে। জানা গিয়েছে, ইরানের হারের পরই কাস্পিয়ান সাগরের তীরে বন্দর আঞ্জিল শহরে লাগাতার গাড়ির হর্ন বাজিয়ে উৎসবে মেতেছিলেন ২৭ বছরের মেহরান সামাক। কিন্তু সেই আনন্দে স্থায়ী হয়নি বেশিক্ষণ। রাইসিপন্থী নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতে লুটিয়ে পড়েন সামাক। মৃত্যু হয় তাঁর। এমনটাই দাবি তেহরানের একাধিক মানবাধিকার সংগঠনের। তবে এনিয়ে ইরান প্রশাসনের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
ফুটবলপ্রেমী সামাককে আবার ইরানের জাতীয় দলের মিডফিল্ডার সঈদ এজাতোলাহি চিনতেন। মৃত যুবক এজাতোলাহি ছেলেবেলার সতীর্থও ছিলেন। মৃত্য়ুর পর সামাকের সঙ্গে একটি ছবি ইসস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন ইরানের মিডফিল্ডার। সঙ্গে লিখেছেন, “আজকে রাতের হারের পর তোমার মৃত্যুর খবর আমার হৃদয়কে পুড়িয়ে দিয়েছে।” তাঁর আরও সংযোজন, “একদিন মুখোশ খুলবেই, সত্য় প্রকাশ্যে আসবেই। এটা আমাদের যুবসমাজের প্রাপ্য হতে পারে না। এটা আমাদের দেশের প্রাপ্য হতে পারে না।” স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ নাগরিকের মৃত্য়ুতে ক্ষোভে ফুটছে গোটা ইরান।