সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাড়ে চার বছর স্বাভাবিক হয়েছে ভারত-চিন সীমান্তের পরিস্থিতি। সেনা প্রত্যাহারের পর চলছে স্বাভাবিক নজরদারি। সীমান্তে শান্তি ফেরাতে যৌথভাবে এই সিদ্ধান্ত নেয় দুদেশ। সেই মতো মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে দিল্লি-বেজিংয়ের মধ্যে। কবে শেষ হয় সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া? খোলসা করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর।
এই অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী। আজ তিনি দুদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বৈঠকে বসেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী পেনি ওংয়ের সঙ্গে। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখী হন তাঁরা। সেখানেই জয়শংকরকে প্রশ্ন করা হয় ভারত-চিন সম্পর্ক ও সেনা প্রত্যাহার নিয়ে। জবাবে তিনি বলেন, "গত ২১ অক্টোবর আমরা চুক্তি বাস্তবায়নের শেষ ধাপ পূরণ করেছি। যা মূলত সীমান্তে দুপক্ষের টহলের অধিকার নিয়ে ছিল। সেদিনই সেনাপ্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। আমরা মনে করি এই পদক্ষেপ দুদেশের সম্পর্কের ইতিবাচক উন্নতি ঘটাবে।"
আগামিদিনে ভারত ও চিনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও বিদেশমন্ত্রীরা নিয়মিত আলোচনায় বসবেন। এনিয়ে সহমত পোষণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এই বিষয়টি উল্লেখ করে এদিন জয়শংকর বলেন, "কাজানে অনুষ্ঠিত ব্রিকস সামিটে বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তখনই এই বিষয়ে আলোচনা হয় তাঁদের মধ্যে। সম্পূর্ণরূপে চুক্তির বাস্তবায়ন হলেও আমাদের কয়েকটি চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে। দুই রাষ্ট্রনেতা সম্মত হয়েছেন কূটনৈতিক স্তরে আলোচনায় বসতে। এবার এই বিষয়ের উপর দিয়ে আমাদের কাজ শুরু করতে হবে।" আগেই জানা গিয়েছিল সীমান্তে নজরদারি নিয়ে নিয়মিত আলোচনায় বসবে দুদেশ।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৩১ অক্টোবরের আগে পর্যন্ত সীমান্তে স্রেফ টহলদারি চালাত ভারত-চিন। কিন্তু গালওয়ান সংঘর্ষের পর থেকে সীমান্তে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। সেনা মোতায়েন করে দুদেশই। এমনকি অস্থায়ী ছাউনি-সহ নানা নির্মাণও দেখা যায় সীমান্ত সংলগ্ন এলাকাজুড়ে। কূটনৈতিক ক্ষেত্রেও দুদেশের মধ্যে বৈরিতা বাড়ে। তবে প্রধানমন্ত্রী মোদির ব্রিকস সামিটে যোগ দেওয়ার ঠিক আগেই সেনা সরানো এবং ২০২০ সাল থেকে তৈরি হওয়া সমস্যাগুলো সমাধান করতে দিল্লি-বেজিং একমত হয়। এনিয়ে বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রি জানান, সামরিক তৎপরতা কমিয়ে কেবলমাত্র টহলদারির সেই পুরনো ব্যবস্থায় ফিরে যাবে দুদেশ। চিনের তরফেও একই কথা জানানো হয় বিবৃতি জারি করে।
এর পরই গত ৩১ অক্টোবর সেনার তরফে জানানো হয়, ডেমচক এবং দেপসাংয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন এলাকা থেকে সম্পূর্ণভাবে সেনা প্রত্যাহার করেছে দুদেশ। শুরু হয়েছে স্বাভাবিক নজরদারি। তবে এখনও যেসমস্ত সমস্যা রয়েছে সেগুলো মেটানোর জন্য নিয়মিত আলোচনায় বসবেন দুদেশের সেনার কমান্ডার পর্যায়ের আধিকারিকরা। সীমান্ত এলাকায় যেন কোনও ভুল বোঝাবুঝি না হয়, সেদিকেও নজর রাখবেন তাঁরা। সাড়ে চার বছর পর এদিন দীপাবলি উপলক্ষেও একে অপরকে মিষ্টি উপহার দেয় ভারত-চিনের সেনা।