shono
Advertisement

উত্তর কোরিয়ায় ‘প্রথম’করোনা সংক্রমণ, জরুরি অবস্থা ঘোষণা একনায়ক কিমের

এক ব্যক্তির শরীরে মিলেছে করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট।
Posted: 10:11 AM May 12, 2022Updated: 10:11 AM May 12, 2022

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সুকুমার রায় লিখেছিলেন, ‘শিব ঠাকুরের আপন দেশে, আইন কানুন সর্বনেশে..’! তার বাস্তব সংস্করণ হলেন উত্তর কোরিয়ার সর্বাধিনায়ক কিম জং উন (Kim Jong Un)। গোটা বিশ্ব করোনার থাবায় স্ত্রস্ত। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম তখন গর্বে উড়ছিলেন প্রায়। কারণ, উত্তর কোরিয়ার দাবি ছিল, তাদের দেশে এখনও কোনও করোনা রোগীর হদিশ পাওয়া যায়নি। তাই করোনা মোকাবিলায় বিশ্বের মধ্যে নজরি সৃষ্টির দাবিও করেছিলেন কিম। কিন্তু এবার এক কোভিড আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে বলে জানিয়েছে দেশটি। তাই দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন স্বৈরাচারী কিম।

Advertisement

[আরও পড়ুন: কবে হবে কিমের সুমতি? এবার সাবমেরিন থেকে মিসাইল ছুঁড়ল উত্তর কোরিয়ার ফৌজ]

সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে খবর, দেশে ‘প্রথম করোনা আক্রান্তের’ হদিশ পাওয়া গিয়েছে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ। জানানো হয়েছে, রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে এক ব্যক্তির শরীরে করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গিয়েছে। সংক্রমণের খবর পেতেই পলিটবুরোর সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন কিম। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হবে। কেসিএনএ-র প্রতিবেদন মোতাবেক, বৈঠকে কিম বলেন, “করোনা ভাইরাসকে সমূলে শেষ করতে হবে। এবং অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এই কাজ করতে হবে।” একইসঙ্গে কিমের দাবি, যেহেতু উত্তর কোরিয়ার মানুষ অত্যন্ত সচেতন, তাই দ্রুত তাঁরা এই জরুরি অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হবেন।

বিশ্লেষকদের মতে, মুখে যা খুশি দাবি করলেও উত্তর কোরিয়ায় করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছেছে। পরিস্থিতি আরও জটিল করে দেশটির প্রায় ২ কোটি ৫০ লক্ষ মানুষের একজনকে টিকা দেওয়া হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বারবার টিকাকরণের দাবি জানালেও সেই আরজিতে আমল দেননি কিম। এমনকী, বন্ধু চিন ও রাশিয়া টিকা জোগান দেওয়ার প্রস্তাব দিলে তাও ফিরিয়ে দেন তিনি। ফলে দেশটিতে মৃত্যুর হার অত্যন্ত বেশি বলেই মনে করা হচ্ছে। এবং গত ঘটনা ধামাচাপা দিচ্ছে কিমের প্রশাসন।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে গোটা বিশ্বে করোনার প্রকোপ বাড়তে থাকার সময় দেশের সীমান্ত বন্ধ করে দেয় কিম সরকার। কিন্তু তবুও সংক্রমণ ঠেকানো যায়নি বলে দাবি। আসান ইনস্টিটিউট ফর পলিসি স্টাডিজের এক গবেষক গো মিয়ং হিউন জানিয়েছিলেন, দক্ষিণ কোরিয়া ও চিন থেকে উত্তর কোরিয়ায় করোনার সংক্রমণ ঘটেছে। এই কারণে সিওলের উপর ক্ষুব্ধ কিম ভয়াবহ বদলার কথা ভাবছেন।

এদিকে, করোনা মহামারীর ফলে উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতি আরও ভেঙে পড়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বেশ কয়েক বছর ধরেই উত্তর কোরিয়ায় (North Korea) খাবারের দাম অনেকটা ঊর্ধ্বমুখী। পেট ভরাতে হিমশিম দশা দেশবাসীর। করোনা কালে তা সবচেয়ে সংকটজনক অবস্থায় পৌঁছেছে। এর জন্য ‘series of deviations’কে দায়ী করেছেন কিম জং উন। যদিও বিশেষজ্ঞদের রিপোর্ট অনুযায়ী, একাধিক প্রাকৃতিক বিপর্যয়, কৃষিক্ষেত্রে সঠিক পরিকল্পনা ও পরিকাঠামোর অভাব-সহ একাধিক বিষয়কে দায়ী করা হয়েছে। কিন্তু সেসবকে আমল না দিয়ে উত্তর কোরিয়ার একনায়কের বক্তব্য, কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন চাহিদার তুলনায় অনেক কম। তাই খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় সকলের উচিত কম খাবার খাওয়া। সবমিলিয়ে দেশটির পরিস্থিতি যে অত্যন্ত শোচনীয় তা স্পষ্ট।

[আরও পড়ুন: ঋণ মেটাতে চিনকে জমি দিচ্ছে পাকিস্তান, ক্ষোভে ফেটে পড়লেন অধিকৃত কাশ্মীরের বাসিন্দারা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement