সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েই ক্যাবিনেটে বড়সড় রদবদল করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই দেখেই আতঙ্কে ভুগছে পাকিস্তান। সূত্রের খবর, ট্রাম্প ক্যাবিনেটের প্রতিরক্ষা সচিব, বিদেশ সচিব, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, গোয়েন্দা প্রধান- প্রত্যেকের নাম দেখে নাকি বিনিদ্র রজনী যাপন করছেন পাকিস্তানের সেনা কর্তা থেকে রাজনৈতিক উপদেষ্টা সকলেই।
পাকিস্তানের মাথাব্যথার প্রধান কারণ ট্রাম্প-জমানার বিদেশসচিব মার্কো রুবিও। তিনি সেনেটর থাকাকালীন এমন একটি বিল এনেছিলেন, যেখানে স্পষ্ট উল্লেখ ছিল যে ভারতবিরোধী সন্ত্রাসবাদীদের জন্য টাকা ঢালছে পাকিস্তান। একাধিক জঙ্গিগোষ্ঠীকে ব্যবহার করে ভারতে নাশকতার ছক চালাচ্ছে ইসলামাবাদ, তাই আমেরিকার পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে সুরক্ষা প্রদানের জন্য কোনও পদক্ষেপ করা উচিত নয়। এছাড়াও আমেরিকার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের তালিকায় ভারতকে অন্তর্ভুক্ত করার উল্লেখ ছিল ওই বিলে। চিনকে রুখতে ভারতকে সর্বতোভাবে সাহায্য করুক আমেরিকা, সেটাও ওই বিলে উল্লেখ করেছিলেন ট্রাম্পের বিদেশসচিব। প্রতিরক্ষা, প্রযুক্তি, আর্থিক বিনিয়োগ- সমস্ত দিক থেকেই ভারতের পাশে থাকা উচিত ওয়াশিংটনের, এমনটাই মত রুবিওর।
আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজকে নিয়েও চিন্তায় পড়েছে ইসলামাবাদ। অতীতে একাধিকবার প্রকাশ্যে পাকিস্তানের কড়া সমালোচনা শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে। তিনি স্পষ্ট বলেছেন, সন্ত্রাসবাদ কখনই বিদেশনীতির অংশ হতে পারে না। পাকিস্তান সরকার এবং পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইকে সেটা বুঝতে হবে। এছাড়াও সরাসরি সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত তুলসী গ্যাবার্ডকে আমেরিকার জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের ডিরেক্টর পদে বসিয়েছেন ট্রাম্প। ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পরে প্রকাশ্যে ইসলামাবাদের নিন্দা করেছিলেন তুলসী। ওসামা বিন লাদেনকে আশ্রয় দেওয়ার কারণেও ইসলামাবাদকে একাধিকবার তুলোধনা করেছিলেন তিনি। মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএর প্রধান জন র্যাটক্লিফও ঘোষিতভাবে 'পাকিস্তান বিরোধী'।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও পাকিস্তানের থেকে ভারতকেই অগ্রাধিকার দেবেন বলে মত কূটনৈতিক মহলের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত রসায়নও মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ভারত-বন্ধু করে তুলতে পারে। সবমিলিয়ে, মহাশক্তিধর আমেরিকার থেকে আরও দূরে সরে যেতে চলেছে পাকিস্তান। সেই কথা আঁচ করতে পেরেই ঘুম ছুটেছে পাক কূটনীতিবিদদের। সূত্রের খবর, আমেরিকায় পালাবদলের পরেই নাকি পালটাতে চলেছে পাক সরকারের বিদেশনীতিও। সুর নরম করে আমেরিকার সঙ্গে ফের 'বন্ধুত্ব' করতে চাইছে শাহবাজ শরিফের সরকার। কিন্তু ট্রাম্পের মন কি জিততে পারবে ইসলামাবাদ? প্রশ্ন রয়েছে পাক কূটনৈতিক মহলের মনে।