সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিভক্ত আরব দুনিয়াকে একসুতোয় বাঁধল ফুটবল। ‘শত্রু’ দেশ সৌদি আরবের জয়ে উচ্ছ্বসিত কাতার! মঙ্গলবার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার অপ্রত্যাশিত পরাজয়ের পর রাজধানী দোহায় একসঙ্গে আনন্দ করতে দেখা গেল সৌদি, কাতারি ও ইয়েমেনিদের। সেই আনন্দ মিছিলে ছিল তিউনিশিয়া, মিশর, মরক্কো, লেবানন ও জর্ডানের ফুটবল ভক্তরাও।
কাতারে অনুষ্ঠিত ফুটবল বিশ্বকাপের (Football World Cup) শুরু থেকেই মিলছে একের পর এক চমক। মঙ্গলবার ‘দানব’ আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে গোটা দুনিয়াকে চমকে দিয়েছে সৌদি আরব। ফুটবলের এই মহারণে এক আরব দেশের এহেন কীর্তিতে বিবাদ সরিয়ে আনন্দে মেতে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলি। মঙ্গলবার রেফারি ফাইনাল বাঁশি বাজাতেই দোহার রাস্তায় গাড়ির মিছিল বের করে সৌদি ফ্যানরা। দ্রুত তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন কাতারের ফুটবল প্রেমীরাও। সেই ভিড়ে শামিল হতে দেখা যায় তিউনিশিয়া, মরক্কো, লেবানন ও জর্ডানের ফুটবল ভক্তদেরও। এএফপি-কে ৪ বছরের জর্ডানের নাগরিক আহমেদ আল-কাসিম বলেন, “কাতারে ইতিহাস তৈরি হয়েছে। এই জয় আরব বিশ্বের জয়। আমি সৌদি সরকারের নীতিকে সমর্থক করি না। কিন্তু তাদের ফুটবল দলের জয়ে খুশি।”
[আরও পড়ুন: ইউক্রেনে দাপট দেখাচ্ছে ‘জেনারেল উইন্টার’, কিয়েভে ফের আছড়ে পড়ল রুশ ক্ষেপণাস্ত্র]
বিশ্লেষকরা বলছেন, আজ থেকে চার বছর আগেও দোহার রাস্তায় সৌদি মিছিল কার্যত অসম্ভব ছিল। কারণ, ২০১৭ সালে সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার অভিযোগে কাতারকে একঘরে করে ডিয়েছিল সৌদি আরব, বাহরিন ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহী৷ সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল মিশরও। এমনকী, ইয়েমেন বিদ্রোহীদের সঙ্গে যে যুদ্ধ চলছে, তার থেকেও কাতারের বাহিনী সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল এই চার দেশ৷ এর আগে ২০১৪ সালে সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল এই দেশগুলি।
উল্লেখ্য, আল কায়দা ও ইসলামিক স্টেট (ISIS) -এর মতো জঙ্গি গোষ্ঠীকেও কাতার মদত দিচ্ছে বলে বরাবর অভিয়োগ করেছে অন্য আরব দেশগুলি৷ প্যালেস্তাইনের জঙ্গি গোষ্ঠী হামাসের প্রধান খালেদ মিশালকে আশ্রয় দেওয়ার জন্যও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে কাতারকে৷ দেশটিকে প্রভাবিত করছে ইরান বলেও রিযাধের দাবি। এমনকী, ২০১৩ সালে দোহায় দপ্তরও খুলেছে আফগান তালিবান৷ সবমিলিয়ে, নিজেদের মধ্যেই প্রবল সংঘাত রয়েছে আরব বিশ্বে। কিন্তু এবার ফুটবল সেই সমস্ত বিবাদ যেন মুছে দিল।