সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিক্ষোভের আগুনে পুড়ছে শ্রীলঙ্কা (Sri Lanka)। আর্থিক সংকটে বিপর্যস্ত দেশ ও বিপন্ন দেশবাসীকে ফেলে পালালেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে (Sri Lanka President Gotabaya Rajapaksa)। সপরিবারে তিনি মালদ্বীপে গাঢাকা দিয়েছেন বলেই জানা গিয়েছে। তেমনটাই দাবি এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের। এও জানা যাচ্ছে, মালদ্বীপ (Maldives) নয়, ভারত বা দুবাইয়েই যেতে চেয়েছিলেন গোতাবায়া। কিন্তু সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যেতেই মালদ্বীপে আশ্রয় নিলেন তিনি।
বুধবার তিনি ইস্তফা দেবেন, এমনটাই জানিয়েছিলেন স্পিকার। কিন্তু তার আগেই দেশ ছেড়েছেন রাজাপক্ষে। তবে তিনি আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, নিজের পরিবারকে নিরাপদ স্থানে না নিয়ে যেতে পারলে ইস্তফা দেবেন না। এখন দেখার, দেশ ছাড়ার পরে নিজের ইস্তফার কথা আলাদা করে ঘোষণা করেন কিনা গোতাবায়া।
এদিকে কোনও কোনও সংবাদমাধ্যমের দাবি, রাজাপক্ষেকে দেশ ছাড়তে সাহায্য করেছে ভারত। কিন্তু শ্রীলঙ্কার ভারতীয় দূতাবাস এহেন গুঞ্জনকে উড়িয়ে দিয়েছে। জানিয়ে দিয়েছে, এমন অভিযোগ নিতান্তই ‘ভিত্তিহীন’ ও ‘মনগড়া’।
[আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোটের আগে শৃঙ্খলা রক্ষায় দলীয় কর্মীদের কড়া বার্তা অভিষেকের, দিলেন হোম ওয়ার্কও]
গত সপ্তাহের শেষে রাষ্ট্রপতি ভবনের দখল নেয় সাধারণ মানুষ। রিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে তা আগেই আঁচ করেছিলেন গোতাবায়া। তাই আগেভাগেই রাজপ্রাসাদ ছাড়েন তিনি। তারপর থেকে তাঁর কোনও সন্ধান ছিল না। এমনও শোনা যায়, তিনি শ্রীলঙ্কার নৌসেনা শিবিরে লুকিয়ে রয়েছেন। অবশেষে মঙ্গলবার রাতে সেনা বিমানে দেশ ছাড়েন গোতাবায়া। সঙ্গে ছিল তাঁর পরিবারের পাঁচ সদস্য। ছিলেন তিনজন কর্মীও। তাঁদের বিমান মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে পৌঁছে গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka crisis) অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি ঘটছে। দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক ডামাডোলের জেরে প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষের পদত্যাগের দাবিতে সরব হয় জনগণ। পরিস্থিতি হাতের বাইরে পুরোপুরি চলে যায় গত শনিবার। সেদিন বেলা যত গড়াতে থাকে, দেখা যায় বিক্ষোভ ততই বাড়ছে। প্রশাসনের বাধা মানেনি উন্মত্ত জনতা। রেল কর্তৃপক্ষকে ট্রেন চালাতে বাধ্য করা হয় যাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তারা রাজধানী কলম্বোর প্রতিবাদ মিছিলে পৌঁছে যেতে পারে। রাত বাড়তেই প্রেসিডেন্টের বাসভবন ঘিরে ফেলে বিক্ষুব্ধ জনতা। বিক্ষোভ বাড়তেই নিরাপত্তারক্ষীরা গোতাবায়াকে সরিয়ে নিয়ে যায়। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে শূন্যে গুলি ছোঁড়ে তারা। ছোঁড়া হয় কাঁদানে গ্যাসও। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি হয়ে ওঠে উত্তপ্ত। অবশেষে কয়েকদিন আত্মগোপন করে থাকার পরে বিপর্যস্ত দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেন প্রেসিডেন্ট গোতবায়া।