সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখলের পরে তালিবান (Taliban) প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, নারীশিক্ষায় বাধা দেওয়া হবে না। কিন্তু বাস্তবে সেই কথা রাখেনি তারা। গত মার্চ মাসে মাধ্যমিক স্তরে মেয়েদের স্কুল খোলার কথা ঘোষণা করেও শেষ পর্যন্ত তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে কিছুদিন আগে তালিবান নেতা সিরাজুদ্দিন হাক্কানি (Sirajuddin Haqqani) বলেছিলেন, মেয়েদের পড়াশোনা নিয়ে খুব তাড়াতাড়ি ‘সুখবর’ শোনাতে চলেছে তারা। কিন্তু তারপরেই প্রকাশ্যে এল হাক্কানির একটি মন্তব্য। তিনি বলেছেন, “দুষ্টু মেয়েদের বাড়িতেই থাকতে হবে”।
স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, এই কথা বলে কি বোঝাতে চেয়েছেন তালিবান সুপ্রিমো? উত্তর দিয়েছেন হাক্কানি নিজেই। তিনি বলেছেন, “দুষ্টু বলতে বোঝানো হয়েছে সেই মেয়েদের (Afghan Women), যারা বিদেশী শক্তির দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে বর্তমান সরকারের দিকে আঙুল তুলেছে।” প্রসঙ্গত, তালিবান ক্ষমতায় আসার পরে বহু মহিলা পথে নেমে বিক্ষোভ করেছিলেন। ফলে তাঁদের প্রতি তালিবানের রাগ রয়েছে। হাক্কানির এই মন্তব্যে বোঝা যায়, সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে পড়াশোনা করার অনুমতি মিলবে না।
[আরও পড়ুন: বাইডেনের এশিয়া সফরে পারমাণবিক বিস্ফোরণের আশঙ্কা, আমেরিকার নজরে কিমের কোরিয়া]
কবে থেকে মেয়েরা মাধ্যমিক স্কুলে যেতে পারবে? সেই প্রশ্নের উত্তরে নির্দিষ্ট সময়ের উল্লেখ করেননি তিনি। আফগান মিডিয়া সূত্রে জানা গিয়েছে, শরিয়তি আইন এবং আফগান সংস্কৃতি মেনে মেয়েদের উপযোগী স্কুল ইউনিফর্ম তৈরি করা যায়নি। সেই কারণেই স্কুল খোলা সম্ভব হয়নি। মেয়েদের বাধ্যতামূলক ভাবে মুখ ঢেকে রাস্তায় বেরোতে হবে কি? উত্তরে হাক্কানি বলেছেন, আমরা কাউকে বাধ্য করছি না। ইসলামি আইন অনুসারে হিজাবে মাথা ঢাকা উচিৎ। সেই নিয়ম মেনে চলা দরকার সকলেরই।
গত বছর অগস্টে তালিবান ক্ষমতায় ফিরে বলেছিল, মুখ না ঢাকলেও অন্তত হিজাবে মাথা ঢাকতে হবে মেয়েদের। কিন্তু কিছুদিন আগেই সেই নির্দেশের বিরুদ্ধ মত পোষণ করে তালিবরা। রাস্তায় বেরোলে মেয়েদের বোরখা পরতেই হবে। হিজাবে মাথা এবং মুখ ঢেকে রাখতেই হবে। কিন্তু জেহাদিদের নির্দেশ মানতে নারাজ স্বাধীনচেতা আফগান মহিলারা। কাবুলের রাস্তায় প্রকাশ্যে হিজাব না পরে প্রতিবাদ দেখিয়েছেন তাঁরা। এই ধরনের আচরণ বরদাস্ত করবে না তালিবান, সেই কথাই বোঝা গেল হাক্কানির মন্তব্যে।