shono
Advertisement

গলছে বরফ! বৈঠকের পর আমেরিকার সঙ্গে পরমাণু চুক্তিতে সবুজ সংকেত ইরানের

সামনের সপ্তাহে ফের ওয়াশিংটন আর তেহরান আলোচনায় বসবে।
Published By: Suchinta Pal ChowdhuryPosted: 01:43 PM Apr 20, 2025Updated: 03:04 PM Apr 20, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হুঁশিয়ারি পালটা হুঁশিয়ারি, নানা জল্পনার পর আমেরিকার সঙ্গে পরমাণু কর্মসূচি বা পরিকল্পনা নিয়ে বৈঠকে বসেছে ইরান। ইটালির রোমে চলছে এই আলোচনা। যা সদর্থক হয়েছে বলেই জানিয়েছেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি। তাহলে কি বরফ গলছে দু'দেশের মধ্যে? মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপে কি পরমাণু অস্ত্রের দৌড় থেকে সরবে তেহরান? উঠছে এমনই প্রশ্ন।

Advertisement

প্রথম দফায় গত সপ্তাহে ওমানে দু'দেশের মধ্যে এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। এবার দ্বিতীয় দফায় রোমে বৈঠকে বসেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফ ও ইরানের বিদেশমন্ত্রী আরাকচি। গতকাল ওমানের এক আধিকারিকের মধ্যস্থতায় ৪ ঘণ্টা কথা বলেন তাঁরা। এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখী হয়ে আরাকচি জানান, "আমাদের বোঝাপড়া ভালো হয়েছে। গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। চুক্তির নকশা তৈরিতে এগানোর জন্য আরও বৈঠক হবে।" জানা গিয়েছে, সামনের সপ্তাহে ফের ওয়াশিংটন আর তেহরান আলোচনায় বসবে। বিশ্বশক্তির সমীকরণ দেখলে বোঝা যাবে, পরমাণু অস্ত্র নিয়ে অহরহ গবেষণা করে চলেছে ইরান। একের পর এক যুদ্ধাস্ত্রের পরীক্ষা চালাচ্ছে তারা। যা চিন্তার কারণা আমেরিকা ও পশ্চিমি দুনিয়ার।

তাই নানা নিষেধাজ্ঞা চাপানো হচ্ছে তেহরানের উপর। সম্প্রতি সেদেশের উপর ড্রোন উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল পশ্চিমা বিশ্ব। কিন্তু তাতে দমে যায়নি ইরান। পালটা ভয়ংকর হাতিয়ার বানিয়েছে তারা। কামিকাজে ড্রোনটিকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে গড়ে তোলা হয়েছে। যা শত্রুপক্ষের উপর আরও শক্তিশালী আঘাত হানতে সক্ষম। কয়েকদিন আগেই প্রকাশ্যে আসে ইরানের ইসলামিক রেভেলিউশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) ‘মিসাইল সিটি’। যা আসলে তাদের তৃতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডার। যা চিন্তা বাড়ায় হোয়াইট হাউসের।

উল্লেখ্য, বারাক ওবামা মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ইরানের সঙ্গে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল আমেরিকা, ব্রিটেন, চিন, ফ্রান্স ও রাশিয়া। ২০১৫-তে হওয়া এই চুক্তির শর্তানুযায়ী, তাদের যে কোনও রকমের পরমাণু কার্যক্রম বন্ধ রাখবে ইরান। প্রয়োজনে তাদের যে কোনও পারমাণবিক উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে নজরদারি চালাতে পারবে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি কমিশন বা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি। পরিবর্তে ইরানের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে মোটা অঙ্কের ত্রাণ পাঠাবে আমেরিকা। কিন্তু ২০১৮ সালে চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি অভিযোগ করেন, শর্ত না মেনে গোপনে আণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে ইরান।

এরপর ২০২০ সালে ট্রাম্প জমানাতেই নিহত হন ইরানের ‘কাডস ফোর্স’-এর কমান্ডার জেনারেল কাশেম সোলেমানি। সেবছরের ৩ জানুয়ারি ট্রাম্পের নির্দেশেই বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন ড্রোন হামলা হয়। সোলেমানি-সহ প্রাণ যায় ৮ জনের। পালটা মার্কিন সেনাঘাঁটিতে রকেট হামলা চালিয়েছিল ইরানের সেনা। সেই থেকেই দুদেশের মধ্যে সংঘাত আরও তীব্র হয়। তবে ক্ষমতায় এসে ফের সেই চুক্তি বলবৎ করার চেষ্টা করেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কিন্তু তিনিও সফল হননি। উলটে গাজায় হামাস-ইজরায়েল যুদ্ধে ইরানের সঙ্গে আমেরিকা নতুন করে সংঘাতে জড়ায়। বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতে আর আমেরিকার সঙ্গে জড়াতে চান না ইরানের সংস্কারপন্থী প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেস্কিয়ান। ট্রাম্পের নয়া ‘শুল্কবাণে’র প্রভাব পড়ছে ইরানের অর্থনীতিতেও। তাই আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ চাইছেন পেজেস্কিয়ান।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • হুঁশিয়ারি পালটা হুঁশিয়ারি, নানা জল্পনার পর আমেরিকার সঙ্গে পরমাণু কর্মসূচি বা পরিকল্পনা নিয়ে বৈঠকে বসেছে ইরান।
  • যা সদর্থক হয়েছে বলেই জানিয়েছেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি।
  • মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপে কি পরমাণু অস্ত্রের দৌড় থেকে সরবে তেহরান?
Advertisement