সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিন বছর পূর্ণ হতে চললেও যুদ্ধের ময়দান থেকে সরে আসেননি। রাশিয়ার বিরুদ্ধে মাটি কামড়ে লড়াই করে যাচ্ছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। কিন্তু এখন তাঁর যুদ্ধের রসদ ফুরিয়ে আসছে। অস্ত্রের জন্য আমেরিকা-সহ পশ্চিমের বিভিন্ন দেশের কাছে দরবার করছেন তিনি। এই পরিস্থিতি নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে তাঁর অনুরোধ, "পুতিন ইউরোপকে পান না, আমাদের পাশে থাকুন।"

কয়েকদিন আগেই ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, "জেলেনস্কি অনেক বৃহৎ ও অনেক বেশি শক্তিশালী একটি পক্ষের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।” মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাফ জানিয়েছিলেন, রাশিয়ার সঙ্গে একটি চুক্তির মাধ্যমে এই যুদ্ধ এড়াতে পারতেন জেলেনস্কি। কিন্তু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কোনওভাবেই 'শত্রুপক্ষে'র কাছে মাথা নত করতে রাজি নন। রয়টার্স সূত্রে খবর, এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "আমি চাই, ট্রাম্প আমাদের পাশে থাকুন। তিনি ইউক্রেনকে বিচার পাইয়ে দিন। পুতিন ইউরোপকে ভয় পান না।"
বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রনের ভাগ্য অনেকটাই নির্ভর করছে আমেরিকার উপর। জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন খোলা হাতে কিয়েভকে সাহায্য করে গিয়েছেন। এর জন্য তাঁকে মার্কিন কংগ্রেসে বিরোধের মুখেও পড়তে হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনে জেতার পর এখন ফের একবার মসনদে ট্রাম্প। নির্বাচনের আগে একাধিকবার রিপাবলিকান নেতাকে বলতে শোনা গিয়েছে, “আমি ক্ষমতায় এলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধ থামিয়ে দেব।” মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে শান্তিচুক্তি ট্রাম্পের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি। কিন্তু তা কীভাবে করা হবে, তার কোনও রূপরেখা এখনও পর্যন্ত প্রকাশ করেননি ট্রাম্প। শান্তিচুক্তির জন্য পুতিন যেসব শর্ত দিয়েছেন, সেগুলোর মধ্যে পূর্ব ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলে ইউক্রেনের সেনা প্রত্যাহার। তবে রুশ প্রেসিডেন্টের এই শর্ত পূরণ করা বেশ কঠিন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ জেলেনস্কি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, যুদ্ধের ময়দানে এক ইঞ্চি জমিও তিনি ছাড়বেন না।
এর মধ্যেই ফের ট্রাম্প জানান, তাঁর মতে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের পালটা হামলার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। উল্লেখ্য, জেলেনস্কির প্রতি বাইডেনের পরামর্শ ছিল ট্রাম্পের সম্পূর্ণ বিপরীত। বাইডেন ইউক্রেনের আত্মরক্ষার অধিকারকে সমর্থন করেছিলেন। পুতিনের আগ্রাসনের প্রতিবাদে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপও করেছিলেন। যুদ্ধের জন্য জেলেনস্কিকেই কার্যত দায়ী করেন তিনি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ট্রাম্পের এই বক্তব্যের পরই এহেন অনুরোধ করলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।