সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জলবিদ্যুৎ, বন্যা প্রতিরোধ ও দুর্যোগ হ্রাস, নদী খনন, জলসম্পদের সমন্বিত ব্যবস্থাপনা, জলসম্পদ উন্নয়ন এবং সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি বিনিময়ের ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ও চিন। এই মুহূর্তে বেজিংয়ে রয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। বৈঠকে বসেছেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে। দু'জনের আলোচনার পর মোট আটটি মউ স্বাক্ষর হয়েছে বলে খবর। এছাড়া তিস্তা প্রকল্পে বেজিংকে স্বাগত জানিয়েছে ঢাকা।

এশিয়ার বোয়াও ফোরামের মহাসচিবের আমন্ত্রণে ইউনুস গত ২৬ ও ২৭ মার্চ চিনের হাইনান প্রদেশে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া বার্ষিক সম্মেলনে অংশ নেন। এরপর চিন সরকারের আমন্ত্রণে তিনি ২৭ থেকে ২৯ মার্চ বেজিং সফরে রয়েছেন। শুক্রবার জিনপিংয়ের সঙ্গে করেন ইউনুস। এরপরই গতকাল বাংলাদেশ ও চিন যৌথ বিবৃতি দিয়ে জানায়, তিস্তা নদীর সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ও পুনঃসংস্কার প্রকল্পে চিনা কোম্পানিগুলোর অংশগ্রহণকে বাংলাদেশ স্বাগত জানিয়েছে। অর্থাৎ তিস্তা প্রকল্পে চিনের সহযোগিতাকে স্বাগত জানাল বাংলাদেশ।
এছাড়া এদিন দু'দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক এবং কারিগরি সহযোগিতা–সংক্রান্ত একটি চুক্তি এবং ক্লাসিক সাহিত্যের অনুবাদ ও প্রকাশনা, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বিনিময় ও সহযোগিতা, সংবাদ বিনিময়, গণমাধ্যম, ক্রীড়া ও স্বাস্থ্য খাতে আটটি মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবদুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বিনিয়োগ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরুর ঘোষণা, চিন শিল্প অর্থনৈতিক অঞ্চল শুরুর ঘোষণা, মোংলা বন্দরের আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের জন্য একটি বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষর, রোবট ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণ এবং হৃদরোগ সার্জারি যানবাহন দানের বিষয়ে পাঁচটি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় চিনকে আরও জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।
বলে রাখা ভালো, বাংলাদেশের তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রকল্পে আগ্রহী ভারত ও চিন দুদেশই। কিন্তু শেখ হাসিনার আমলে এই প্রকল্পে কাজ করার জন্য নয়াদিল্লিকেই অগ্রাধিকার দিয়েছিল ঢাকা। কিন্তু বাংলাদেশের কূটনৈতিক চিত্র প্রায় পুরোটাই বদলে গিয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের উদ্বেগ বাড়িয়ে ঢাকায় আনাগোনা বেড়েছে চিনা আধিকারিকদের। বিএনপি, জামাতের মতো বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎও করছেন তাঁরা। ফলে ঢাকার উপর কতটা প্রভাব বিস্তার করছে ‘ড্রাগন’ সেদিকেই তীক্ষ্ণ নজর রয়েছে দিল্লির।