ভারত: ২৮১/৪ (৪২ওভার, হরমনপ্রীত- ১৭১*)
অস্ট্রেলিয়া: ২৪৫ (ব্ল্যাকওয়েল-৯০)
৩৬ রানে জয়ী ভারত
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০০৩ সালে জোহানেসবার্গে বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আটকে গিয়েছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের টিম ইন্ডিয়া। ২০ বছর পর বিশ্বকাপের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল। ২০০৫-এ একই ঘটনা ঘটে মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপে। সেবারও ভারতকে দুরমুশ করে বিশ্বকাপ উঠেছিল অস্ট্রেলিয়ার ঘরে। অবশেষে ছবিটা পালটে দিলেন মিতালি রাজরা। সেই সব হতাশার মুহূর্তগুলোকে মুছে দিয়ে দেশবাসীর চোখে-মুখে তৃপ্তির হাসি ফোটালেন হরমনপ্রীত কৌররা। সৌরভরাও যা পারেননি, সেটাই করে দেখালেন মিতালিরা। বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় কাঁটা উপড়ে ফেলে কাপ জয়ের চূড়ান্ত লড়াইয়ে পৌঁছে গেল উইমেন ইন ব্লু।
অবিসংবাদী ফেভরিট, ছ’বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। যাদের কাছে কিনা দুর্দান্ত পারফর্ম করার পরও গ্রুপ পর্বে হারতে হয়েছিল। তাই সেমিফাইনালের লড়াইটা ঠিক কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল, তা মিতালিদের থেকে ভাল আর কে জানবে। সেই অজি বোলারদের বিরুদ্ধেই ফের গর্জে উঠল হরমনপ্রীত কৌরের ব্যাট। অসাধারণ, অনবদ্য শব্দগুলোও যেন তাঁর ব্যাটিং স্টাইলের সামনে ফিকে। ক্লাস ক্রিকেটের পরিচয় দিয়ে ফের একবার ক্রিকেটপ্রেমীদের মন জয় করলেন তিনি। ১৭১ রানে অপরাজিত থেকে ভারতকে রানের পাহাড়ে পৌঁছে দিয়ে মাঠ ছাড়লেন হরমনপ্রীত।
শেষ চারের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে টসে জেতাটা বেশ জরুরি ছিল। তাতেও মিতালি রাজের ভাগ্যের জয়। কিন্তু তার আগেই বাদ সাধল ইংল্যান্ডের খামখেয়ালি বৃষ্টি। যার জেরে ম্যাচ প্রায় দুঘণ্টা দেরিতে শুরু হল। ফলে ওভার গেল কমে। গ্রুপ পর্যায়ে যে ভুলগুলো করেছিলেন, সেসব শুধরেই এদিন মাঠে নামেন ঝুলনরা। লক্ষ্য ছিল, অজিবাহিনীকে বড় রানের সামনে ফেলা। ওভার কমে গেলেও সেই লক্ষ্যে সম্পূর্ণ সফল তাঁরা। সৌজন্যে হরমনপ্রীতের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি। ৯৯ রানে থাকাকালীন রানআউট হতে গিয়েও অল্পের জন্য রক্ষা পান। তারপর আর কায়দাতেই তাঁকে থামাতে পারেননি অজি বোলাররা। বিশ্বের এক নম্বর দলের বিরুদ্ধে স্বপ্নের ইনিংস খেললেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় তখন শুভেচ্ছার বন্যা বইছে। শেহবাগ থেকে শাহরুখ খান, শচীন থেকে অনিল কুম্বলে, হরমনপ্রীতকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন সকলে।
ব্যাটে পাঞ্জাব দি কুড়ি কামাল করার দিন, জ্বলে উঠলেন ভারতীয় বোলাররাও। টপ-অর্ডার ভেঙে দিয়ে শুরুতেই অজিদের আত্মবিশ্বাসে জোর ধাক্কা মারেন ঝুলন, শিখা পাণ্ডেরা। দুজনেই দুটি করে উইকেট নেন। তিন উইকেট তুলে নেন দীপ্তি শর্মা। শেষ মুহূর্তে ব্ল্যাকওয়েল দারুণ লড়াই দিয়েও শেষরক্ষা করতে পারলেন না। চাপের মুখে ৯০ রানের ইনিংস খেলে ফেরেন তিনি।
চলতি বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত অসাধারণ ক্রিকেট উপহার দিয়েছেন মিতালিরা। বিশ্বজয় আর মিতালিদের মাঝে এখন হোম ফেভরিট ইংল্যান্ড। যাদের ইতিমধ্যেই টুর্নামেন্টে একবার হারিয়েছেন তাঁরা। নিজেদের দুরন্ত পারফরম্যান্স দিয়েই ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে সুপারহিট করে তুলেছেন বিরাট কোহলিদের জৌলুসে চাপা পড়া মহিলাদের বিশ্বকাপকেও। মিতালিদের ম্যাচ দেখতেও রাত জাগলেন দর্শকরা। আর এভাবেই মাঠের মতো মাঠের বাইরেও যেন জিতে গেলেন মিতালিরা।
The post গতবারের বিশ্বজয়ী অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে ফাইনালে মিতালিরা appeared first on Sangbad Pratidin.