সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবশেষে কেরলের পদ্মনাভস্বামী মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি পেলেন প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী জেসুদাস। হিন্দু ধর্মে বিশ্বাস করেন, এই হলফনামা দিয়েই মিলল অনুমতি। দক্ষিণ ভারতে তাঁর গাওয়া ভক্তিগীতির জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া। কেরলের একটি মন্দিরে নিয়মিত তাঁর ভক্তিগীতি বাজানো হয়। কিন্তু স্রেফ হিন্দু নন বলে এতদিন মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি পাননি প্রখ্যাত শিল্পী। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর, বিজয়া দশমীর দিন, মন্দিরে ঢোকার অনুমতি চেয়ে মন্দির কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন তিনি। সেই আবেদনই মঞ্জুর হল সোমবার।
[মন্দিরের প্রসাদ কতটা স্বাস্থ্যকর? আরটিআই রিপোর্টে বিস্ফোরক তথ্য]
নিজের কয়েক দশকের কেরিয়ারে সত্তর হাজারেরও বেশ গান গেয়েছেন জেসুদাস। পেয়েছেন পদ্ম বিভূষণ সম্মান। ঝুলিতে রয়েছে একাধিক জাতীয় ও রাজ্য স্তরের পুরস্কারও। কিন্তু এতদিন এই শতাব্দী প্রাচীন মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি পাননি। কারণ রোমান ক্যাথলিক পরিবারে জন্ম তাঁর। জন্মসূত্রে হিন্দু না হওয়ার কারণেই মন্দিরে তাঁর প্রবেশাধিকার ছিল না। কেরলের সবরিমালা মন্দির ও কর্নাটকের কোল্লুর মোকাম্বিকা মন্দিরে নিয়মিতই যান জেসুদাস। কেরলের গুরুভায়ুর শহরের একটি মন্দিরে তো আবার তাঁর গাওয়া ভক্তিগীত বাজিয়ে শ্রীকৃষ্ণের ঘুম ভাঙানো হয়। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত সেই মন্দিরে জেসুদাসকে ঢোকার অনুমতি দেয়নি মন্দির কর্তৃপক্ষ। ১৯৬০ সালে একবার গুরুভায়ুর শহরের ওই শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরে জেসুদাসের গুরু চেম্বাই বৈদ্যনাথ ভাগাবথরকে গান গাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু, শিষ্যকে মন্দিরে ঢোকার অনুমতি না দেওয়ার কথা জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হন তিনি। মন্দিরের ভিতরে ঢোকেননি চেম্বাই বৈদ্যনাথ ভাগাবথরও। রাতভর মন্দিরের বাইরেই অনুষ্ঠান করেছিলেন তিনি। তারপরও অবশ্য জেসুদাসকে শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাই এবার তিরুবনন্তপুরমে পদ্মানাভস্বামী মন্দির ঢোকার জন্য আগেভাগেই অনুমতি চেয়ে শনিবার মন্দির কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেন প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী। নিজের আবেদনপত্রে একথাও লেখেন, তিনি হিন্দু ধর্মের প্রতি কতটা শ্রদ্ধাশীল। এরপরই মন্দির কর্তৃপক্ষ ও মন্দিরের পুরোহিতরা বৈঠকে বসেন। বিষয়টি নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। শেষে মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি পান বর্ষীয়ান সংগীতশিল্পী। মন্দিরে তিনি দেবতার অর্চনাও করবেন বলে জানা গিয়েছে। বিশেষ স্তোত্রও পাঠ করবেন।
[রোহিঙ্গাদের জন্য প্রার্থনা করে বিজেপি থেকে বহিষ্কৃত মুসলিম নেত্রী]
পদ্মনাভ মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, হিন্দু দেব-দেবীর উপর যাঁর এমন অগাধ আস্থা তিনি মন্দিরে প্রবেশ করতেই পারেন। মন্দিরের পক্ষ থেকে জেসুদাসকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হল। জেসুদাসের মতো ব্যক্তিত্ব মন্দিরে এলে মানুষ ভিড় জমাবেন। তাই আগে থেকে ব্যবস্থাপনা করে রাখতে হবে। এবার তাঁকে জানাতে হবে তিনি কখন দেবতার দর্শনের জন্য আসবেন। আর দেবতার কাছে প্রার্থনা করবেন। তিনি নিজের সময় জানালেই মন্দিরের তরফ থেকে সবরকম ব্যবস্থা আগে থেকে করে রাখা হবে।
[ডাক্তারিতে সুযোগ না পাওয়ায় স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারল স্বামী]
The post শেষমেশ হিন্দু মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি পেলেন শিল্পী জেসুদাস appeared first on Sangbad Pratidin.