সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জয় শ্রীরাম (Jai Shri Ram)। যোগী আদিত্যনাথের (Yogi Adityanath) সভায় চিৎকার করে এই স্লোগান দিয়েছিলেন তিনি। ভাবতে পারেননি, স্রেফ এই কারণেই রাতারাতি তাঁর জীবনে নেমে আসবে গাঢ় অন্ধকার। উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) ২২ বছরের তরুণ এহসান রাওকে কার্যত বয়কট করেছে তাঁর পরিবার পরিজন। এমনকী প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও পাচ্ছেন তিনি। বাড়ির সামনে সশস্ত্র পাহারা বসিয়েছে পুলিশ। জনসভায় ‘জয় শ্রীরাম’ বলার এমন খেসারত দিতে হবে তা ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি মুসলিম তরুণ।
অথচ গত ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত জীবনটা একদম অন্যরকম ছিল তাঁর জীবন। ওই দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) ও মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সভায় গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই চারপাশের ভিড়ের সঙ্গে গলা মিলিয়ে ‘ভারতমাতা কি জয়’ ও ‘জয় শ্রীরাম’ বলে স্লোগান দেন মাথায় ফেজ পরিহিত এহসান। সেই মুহূর্তটি ক্যামেরাবন্দি হয়ে যায়। আর তা ভাইরাল হতেই জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে এহসানের।
[‘আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রের ১০ মন্ত্রী, ২০ বিধায়ক করোনা আক্রান্ত, কোভিড আতঙ্কে কোপ বিধানসভা অধিবেশনেও!]
একে একে আপনজনরা ত্যাগ করেছেন তরুণের সঙ্গে সম্পর্ক। প্রথমে এক বাল্যবন্ধু। পরে তাঁর দিদি। তিনি সটান ভাইকে বলেছেন, তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোক চান না তাঁদের বাড়ির বউ এমন ভাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন। তালিকায় এরপর জুড়ে যায় তাঁর প্রেমিকার নামও। এক সংবাদমাধ্যমকে সেবিষয়ে বলতে গিয়ে এহসান জানাচ্ছেন, ”আমার সঙ্গে একটি মেয়ের প্রেম ছিল। কিন্তু সে আজ আমার সঙ্গে কথা বলে না। আমি ওকে হারাতে চাই না। কিন্তু ওর বাবা-মা’ও চান না ও আমার সঙ্গে সম্পর্ক রাখুক।”
স্বজনদের এই আচরণের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে খুনের হুমকি ও সামাজিক বয়কটের। এহসান বলছেন, ”আমি সভার ওই পরিবেশে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। তাই ‘জয় শ্রীরাম’ও বলে ফেলেছি। বুঝতে পারিনি কেউ সেটা রেকর্ড করে রাখছে।” তাঁর প্রশ্ন, নিজের জীবনকে নিজের মতো চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বাধীনতা কেন থাকবে না তাঁর? এখনও এই প্রশ্নের উত্তর পাননি তিনি। বরং তাঁর বাড়ির সামনে বসেছে পুলিশ পাহারা। আপাতত এক সংশয় ও উদ্বেগকে সঙ্গী করেই দিন কাটাচ্ছেন উত্তরপ্রদেশের মুসলিম তরুণ।